বরিশালের গৌরনদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হারিছুর রহমানকে প্রধান আসামি করে তাঁর ৭৩ জন অনুসারীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈকত গুহর মা তাপসী রানী গুহ বাদী হয়ে বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করেন। অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলাটি রেকর্ড করার জন্য গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালতের বিচারক মো. মাহফুজুর রহমান।
অভিযোগে বাদী তাপসী রানী গুহ বলেন, গত ২ মে গৌরনদী উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মনির হোসেন মিয়া ও মাহিলাড়া ইউপির চেয়ারম্যান সৈকত গুহসহ ১৫-২০ বাটাজোর ইউনিয়নে একটি জানাজায় যান। রাত সাড়ে সাতটার দিকে তাঁরা বাটাজোর মন্দিরের কাছে পৌঁছালে মো. হারিছুর রহমানের নেতৃত্বে আসামিরা পিস্তল, রাম দা, ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সৈকত গুহর পথরোধ করে। এ সময় আসামিরা তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালান। হারিছুরের সমর্থক ইমতিয়াজ মাহমুদ চেয়ারম্যান সৈকত গুহকে লক্ষ্য করে তিনটি গুলি ছোড়েন। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় সৈকত প্রাণে রক্ষা পান। এ সময় হারিছুরের হাতে থাকা রাম দা দিয়ে সৈকতের মাথায় কুপিয়ে জখম করা হয়। সৈকতকে রক্ষা করতে তাঁর সহযোগী পলাশ হাওলাদার এগিয়ে এলে তাঁকেও কুপিয়ে জখম করা হয়।
গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হারিছুর রহমান ছাড়াও মামলায় ৩০ জন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা হিসেবে রাখা হয়েছে ৩০ জনকে। আসামিদের কয়েকজন হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক মো. মামুন মোল্লা, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক নয়ন শরীফ, মাহিলাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলমগীর কবিরাজ, গৌরনদী উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কাজী রনি, গৌরনদী উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. দেলোয়ার হোসেন, তাঁর ছেলে ছাত্রলীগের সদস্য ইমতিয়াজ মাহমুদ, পৌর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সজীবুর রহমান, বাটাজোর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রিমন তালুকদার ওরফে কালু, মাহিলাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রাসেল রারী, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলিমুজ্জামান, সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাতুল শরীফ, উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইমরান মিয়া, পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আতিক মিয়া, হারিছুরের সমর্থক রিপন রারী, রনি হাওলাদার, মাসুদ রেজা রারী, রনি হাওলাদার-২, করিম তালুকদার, মাহাবুব মোল্লা, রিংকু হাওলাদার, জালাল উদ্দিন প্রমুখ।
মামলায় উল্লেখ থাকা অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. হারিছুর রহমান বলেন, ‘আমার সমর্থক দেলোয়ারকে সৈকত গুহ ও তাঁর সন্ত্রাসীরা গুলি করে ও কুপিয়ে জখম করেছে। আমি ওই দিন ঘটনার সময় থানাসংলগ্ন অফিসে ছিলাম। কিন্তু আমাকে একাধিক মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। আমার প্রতি গৌরনদীর সাধারণ মানুষের ভালোবাসা দেখে এবং আসন্ন নির্বাচনে আমার বিজয় নিশ্চিত জেনে গৌরনদীর চিহ্নিত সন্ত্রাসী একটি গোষ্ঠী আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে নেমেছে। আমার বিজয়কে বাধাগ্রস্ত করতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে।’
গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মো. মাজাহারুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশনা এখনো হাতে পাননি তিনি। পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।