ধর্মপাশা ও মধ্যনগরে বাঁধ 

৭৮টির কাজই শুরু হয়নি  

দুই উপজেলার ১৬৮টি ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে এবার ৩৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

ধর্মপাশার মুগরাইন ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শুরুই হয়নি। গত বৃহস্পতিবার তোলা
প্রথম আলো

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার ১৬৮ ফসল রক্ষা বাঁধের মধ্যে মাত্র ৯০টির কাজ শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২২টি বাঁধের প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়নি। অথচ গত ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বাঁধের কাজ শুরু করার কথা ছিল। কাজ শুরু না হওয়ায় হাওরের বোরো ফসল রক্ষা নিয়ে কৃষকেরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নীতিমালা অনুযায়ী, গত বছরের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের কথা ছিল। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বাঁধের কাজ শুরু করে তা চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার কথা। অথচ এখন পর্যন্ত ২২টি ফসল রক্ষা বাঁধের পিআইসি গঠন করা শেষ হয়নি। কাজ শুরু হয়েছে ৫১ শতাংশ প্রকল্পের।

ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দুই উপজেলার চন্দ্র সোনার থাল, ধানকুনিয়া, সোনামড়ল, গুরমা, গুরমা বর্ধিতাংশ, ঘোড়াডোবা, রুই বিল, কাইলানী, জয়ধনা—এই ৯ হাওর পাউবোর অধীন। ধর্মপাশা উপজেলায় ফসল রক্ষা বাঁধের ১২০টি প্রকল্প রয়েছে। এর বিপরীতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা। ১২০ প্রকল্পের কাজের মধ্যে পিআইসি গঠন শেষ হয়েছে ১০০টিতে এবং কাজ শুরু হয়েছে ৬০টিতে। এদিকে মধ্যনগর উপজেলায় ৪৮টি প্রকল্পের কাজ রয়েছে। এর বিপরীতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। পিআইসি গঠন শেষ হয়েছে ৪৬টিতে এবং কাজ শুরু হয়েছে ৩০টিতে।

গত বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে ধর্মপাশা উপজেলার দেওলা গ্রামের সামনের চন্দ্র সোনার থাল হাওরের মুগরাইন ফসল রক্ষা বাঁধে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কাজ শুরু করা হয়নি।

মধ্যনগর উপজেলার ঘোড়াডোবা হাওরের শালডুয়ারি ফসল রক্ষা বাঁধের প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি পলাশ চন্দ্র সরকার বলেন, যেখান থেকে মাটি তোলা হবে, সেই স্থান থেকে পানি এখনো সরেনি। আশা করছেন, তিন-চার দিনের মধ্যে বাঁধের কাজ শুরু করতে পারবেন।

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের মধ্যনগর উপজেলা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম ও ধর্মপাশা উপজেলা কমিটির সদস্যসচিব চয়ন কান্তি দাস বলেন, বাঁধের কাজ খুবই ধীরগতিতে চলছে। 

শালকুমরা ফসল রক্ষা বাঁধের পিআইসি কমিটির সভাপতি গোলাম সোবহানি বলেন, ‘গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি বাঁধের প্রকল্পের কাজ শেষ করেছি। চতুর্থ কিস্তির অবশিষ্ট অংশের দুই লক্ষাধিক টাকা এখনো বকেয়া পাওনা রয়েছে।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণ কমিটির সদস্যসচিব পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ধর্মপাশার ৫টি হাওরের ৫০ পিআইসির চতুর্থ কিস্তির বকেয়া পাওনা টাকা এসে গেছে। দ্রুত তা বিতরণ করা হবে। এবার দেরিতে পানি নামায় প্রকল্পের স্থান নির্ধারণ, প্রাক্কলন তৈরি, জরিপ ও পিআইসি গঠন যথাসময়ে শেষ হয়নি। 

ধর্মপাশার ইউএনও শীতেষ চন্দ্র সরকার বলেন, তিন-চার দিনের মধ্যে পিআইসি গঠন শেষ করে বাঁধের সব কটি প্রকল্পে কাজ শুরু করা হবে। মধ্যনগর ইউএনও নাহিদ হাসান খান বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাঁধের কাজ শেষ করতে আমাদের সব রকম প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’