ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যার দায়ে এক তরুণকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে এই রায় দেন।
সাজা পাওয়া ওই তরুণের নাম রাসেল সিকদার (২৩)। তাঁর বাড়ি বোয়ালমারী উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের ইছাডাঙ্গা গ্রামে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাঁকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। মারা যাওয়া ওই ছাত্রীর বাড়ি বোয়ালমারীর একটি গ্রামে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন ওই আদালতের পিপি স্বপন পাল।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৪ আগস্ট বিকেলে বোয়ালমারী উপজেলার ইছাডাঙ্গা গ্রামের রাসেল সিকদার ওই ছাত্রীর (১১) বাবার মুদিদোকান থেকে বাকিতে দেড় শ টাকার পণ্য কেনেন। সন্ধ্যায় রাসেল ওই ছাত্রীকে ডেকে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে ওই বাকি টাকা নিয়ে আসতে বলেন। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ওই ছাত্রী রাসেল সিকদারের কাছ থেকে টাকা আনতে গিয়ে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি।
অনেক খোঁজাখুঁজির পর রাত ৯টার দিকে ওই ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা রাসেলের বাড়ির গোসলখানা থেকে হাত–পা বাঁধা অবস্থায় ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে পাশের আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে রাসেল সিকদারকে একমাত্র আসামি করে নারী ও শিশু নির্যানত দমন আইনে হত্যার অভিযোগে বোয়ালমারী থানায় মামলা করেন।
এ হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বোয়ালমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আজাদ হোসেন ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল এ হত্যা ও ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় রাসেল সিকদারকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে ওই ছাত্রীর মা বলেন, দ্রুত এ রায় কার্যকর করা হোক। পাশাপাশি তিনি তাঁর পরিবারের নিরাপত্তার দাবি জানান।
এ বিষয়ে ওই আদালেতর পিপি স্বপন পাল বলেন, এ রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এর ফলে দেশে শিশু ও নারীর প্রতি সহিংসতা কমে আসবে।