ধর্মঘটের অষ্টম দিনে আবার সরকারের সঙ্গে বৈঠক চা-শ্রমিকের

৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে অষ্টম দিনের মতো চা–শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চলছে। শনিবার শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভাড়াউড়া চা বাগানে
ছবি: প্রথম আলো

৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে চা-শ্রমিকদের চলমান অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের অষ্টম দিন আজ শনিবার। গত আট দিনে সরকার ও মালিকপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকে বসেও মজুরি নিয়ে কোনো সমাধান না হওয়ায় শ্রমিকেরা নিজ নিজ এলাকায় সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল করে যাচ্ছেন।

ধর্মঘটের অষ্টম দিনে ফের চা-শ্রমিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে সরকার। আজ বেলা তিনটার দিকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের কার্যালয়ে এ সভা শুরু হয়েছে।

বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপপরিচালক নাহিদুল ইসলাম দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, চলমান শ্রমিক ধর্মঘট নিরসনে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক চা-শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য এসেছেন। সভায় মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবদুস শহীদ, জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানসহ হবিগঞ্জ, সিলেট ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধিরা উপস্থিত আছেন।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা প্রথম আলোকে বলেন, ‘শ্রীমঙ্গলে শ্রম দপ্তরের কার্যালয়ে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী এসেছেন। সেখানে আলোচনার জন্য আমাদের ডাকা হয়েছে। আমরা সেখানে সব নেতা যাচ্ছি। আজ ধর্মঘটের অষ্টম দিন। বাগানে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করছেন। আমরা মানসম্মত মজুরি না পেলে আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

মজুরির দাবিতে অষ্টম দিনের মতো ধর্মঘট করছেন চা–শ্রমিকেরা। শনিবার শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভাড়াউড়া চা বাগানে

এদিকে আন্দোলনের ১২তম ও ধর্মঘটের ৮ম দিনে দাবি আদায়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল করছেন শ্রমিকেরা। চা–বাগানের কাজ বন্ধ রেখে দাবি আদায়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় তাঁদের।

চা-শ্রমিক দুলাল হাজরা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন চলছে। প্রতিদিন পত্রিকা ও টেলিভিশনে সংবাদ হচ্ছে। আমাদের দুঃখগুলো দেখানো হচ্ছে। আমাদের দাবির বিষয়ে বলা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। এ ছাড়া আমাদের অধিকার আদায় হবে না।’

দুলাল হাজরা আরও বলেন, তাঁরা অনেক কষ্ট করে চলছেন। সবকিছুর দাম বেড়েছে। তাঁরাও চান না আন্দোলন করতে। ন্যায্য মজুরি পেলে দ্রুত কাজে যোগ দেবেন। যাঁরা বলেন মজুরির বাইরে শ্রমিকেরা অনেক কিছু পান, তাঁদের তিনি সবকিছু ভালো করে খোঁজ নিয়ে দেখতে বলেন। মালিকপক্ষ মজুরির বাইরে যা দেয় বলে দাবি করে, সেটা সত্য হলে শ্রমিকদের এত কষ্ট করে চলতে হতো না বলে দাবি করেন এই চা-শ্রমিক।