আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বরিশাল এলেন আবুল খায়ের আবদুল্লাহ

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহকে স্বাগত জানাতে স্থানীয় নেতা–কর্মীরা আওয়ামী লীগ নগর কার্যালয়ে সামনে সমাবেশের আয়োজন করেন। এ সময় দলের কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতাও উপস্থিত ছিলেন। বৃহস্পতিবার বরিশাল সদর রোডে
 ছবি: সাইয়ান

বড়সড় শোভাযাত্রা করে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাতকে বরিশালে বরণ করে নিয়েছেন তাঁর সমর্থক নেতা-কর্মীরা। ঢাকা থেকে আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশালে পৌঁছালে নগরের গড়িয়ারপাড়, কাশিপুর, নথুল্লাবাদ, বিএম কলেজ এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সমর্থকেরা আবুল খায়ের আবদুল্লাহকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। বেলা দেড়টায় তিনি সদর রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনের সংর্বধনাস্থলে এসে পৌঁছান।

নগরে প্রবেশের পরপর বিশাল গাড়িবহর ফুলের পাপড়িতে ছেয়ে যায়। ছাদখোলা গাড়িতে দাঁড়িয়ে আবুল খায়ের আবদুল্লাহ সড়কের পাশে অপেক্ষমাণ নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। প্রচণ্ড গরম ও রোদের মধ্যে সড়কের দুই পাশ অসংখ্য সমর্থকের মুহুর্মুহু স্লোগানে মুখর ছিল।

এ সময় আবুল খায়ের আবদুল্লাহর সঙ্গে বরিশালে আসেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন নগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আফজাল হোসেন।

সমাবেশে বরিশাল নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর হোসাইন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস ফুল দিয়ে আবুল খায়ের আবদুল্লাহকে বরণ করেন।

বরিশাল সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার পর আজ বরিশাল ফিরলেন আবুল খায়ের আবদুল্লাহ। এ সময় দলের নেতা–কর্মীরা তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করেন

এ সময় আবুল খায়ের আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমার লক্ষ্য একটাই, সেটা হলো গত পাঁচ বছর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে মুখ থুবড়ে পড়া বরিশাল নগরকে একটি তিলোত্তমা নগরে পরিণত করা। এই নগরের সব শ্রেণি-পেশার নাগরিকদের সম্মান-মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া। নতুন এক বরিশালের অভিযাত্রা শুরু করা।’

বরিশাল সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থিত এই প্রার্থী বলেন, ‘এই নগর হবে শান্তির নগর। আমি বেঁচে থাকতে কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেব না, দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেব না। মানুষের সম্মান ফিরিয়ে দিয়ে একটি জনবান্ধব নগর করার প্রত্যয় নিয়েই আমি কাজ শুরু করেছি।’

আবুল খায়ের আবদুল্লাহকে বরণ করতে নগরের বিভিন্ন স্থানে তাঁর অনুসারী নেতা-কর্মীরা সকাল থেকে অপেক্ষা করছিলেন। নগরের বিভিন্ন স্থানে এ উপলক্ষে তৈরি করা হয় তোরণ। তাঁর ছবি সংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন সাঁটানো হয় নগরের সবগুলো সড়কে।
সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘বরিশালকে একটি তিলোত্তমা নগরে পরিণত করার জন্য আপনারা আবুল খায়ের আবদুল্লাহকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করুন। তিনি একজন সজ্জন, শান্তিপ্রিয় ব্যক্তি। তিনি মানুষকে সম্মান দিতে পারেন, ইজ্জত দিতে জানেন। তিনি বিজয়ী হলে সবার মেয়র হবেন। কে ভোট দিয়েছে, কে দেয়নি, সেটা বিবেচনা করবেন না।’

অনুষ্ঠানে ছিলেন নগর ও জেলার নেতারা। ১৫ এপ্রিল দেশের পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ড। এতে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান আবুল খায়ের আবদুল্লাহ। মনোনয়ন পাওয়ার পর তিনি আজ প্রথম বরিশালে ফিরলেন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বোন আমেনা বেগমের ছোট ছেলে আবুল খায়ের আবদুল্লাহ। তিনি বর্ষীয়ান নেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছোট ভাই এবং বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর ছোট চাচা। সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে মেয়র পদে মনোনয়ন দিতে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ একক প্রার্থী হিসেবে প্রস্তাব পাঠালেও তা অগ্রাহ্য হয়। এর ফলে সাদিক আবদুল্লাহর সমর্থকেরা হতাশ হন।