পাহাড়ে অবৈধভাবে ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের তালিকা প্রতিবছর হালনাগাদ করা হয়। কিন্তু যাঁদের আশ্রয়–প্রশ্রয়ে নিম্ন আয়ের এসব লোক সেখানে বসবাস করছেন, সেসব দখলদারদের তালিকা করা হয় না। পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় বারবার সিদ্ধান্ত হলেও এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে অনুষ্ঠিত পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২৯তম সভায়ও পাহাড়ের অবৈধ স্থাপনার পেছনের দখলদারদের তালিকা নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় তালিকা দেখাতে পারেননি সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তারা। পরে নতুন করে এ তালিকা প্রস্তুত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন সভার সভাপতি বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম। তালিকা প্রস্তুতের পাশাপাশি আকবরশাহ এলাকার সুপারিবাগান, লেকসিটি ও কালিরছড়া খাল এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে তোফায়েল ইসলাম অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে দখলদারদের তালিকা করা হয়েছে কি না, জানতে চান।
তখন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাদি উর রহিম জাদিদ জানান, তাঁদের কাছে জমিদার বা দখলদারদের তালিকা নেই। তবে নগরের ২৬ পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ এবং অবৈধভাবে বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা রয়েছে, যেটি ৬ হাজার ৫৫৮।
এ সময় পাহাড় কাটার মামলা যেহেতু পরিবেশ অধিদপ্তর করে, সে কারণে তাদের কাছে তালিকা রয়েছে কি না, জানতে চান বিভাগীয় কমিশনার।
জবাবে পরিবেশ অধিদপ্তরের (গবেষণাগার) পরিচালক নাসিম ফারহানা বলেন, তাঁদের কাছে কিছু দখলদারের নাম রয়েছে। আগামী সভার আগে তিনি এ তালিকা হালনাগাদ করবেন।
সভায় বিভাগীয় কমিশনার বলেন, পাহাড়ে উচ্চ আয়ের লোকজন নিম্ন আয়ের লোকজনকে বসিয়ে আয় করছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলাসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা পরিবেশ অধিদপ্তর নিয়েছে। নতুন করে তাদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির আগের একাধিক সভায়ও পাহাড়ের দখলদারদের তালিকা তৈরি এবং তাঁদের বিরুদ্ধে মামলাসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ ছিল। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো অগ্রগতি হয়নি।
বিভাগীয় কমিশনার আরও বলেন, আকবরশাহ এলাকার কালিরছড়া খাল উদ্ধার, সুপারিবাগান ও লেকসিটি এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ বিভিন্ন সেবা–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, পিডিবি, কেজিডিসিএল, ওয়াসা, পুলিশ, সিডিএসহ বিভিন্ন সংস্থা যৌথভাবে এ অভিযান চালাবে বলে জানানো হয়। এ ছাড়া উচ্ছেদের আগে একটি পরিদর্শন কমিটিও গঠন করা হয়।
সভায় জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, রেলওয়ের বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা দীপঙ্কর তঞ্চঙ্গ্যা, সিডিএর অথরাইজেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসান, কেজিডিসিএলের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।