ভোলার চরফ্যাশনে ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে লাইজু বেগমের বসতঘরটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে যায়। জাহানপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের এই বাসিন্দা ঘূর্ণিঝড়ের ২০ দিন পর আজ রোববার মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৬ হাজার টাকা পেয়েছেন। ঘরটি সংস্কার করতে অন্তত ৪০ হাজার লাগলেও এ টাকা হাতে পেয়ে ভীষণ খুশি লাইজু। তিনি বলেন, যে পরিমাণ টাকা পেয়েছেন, তা দিয়ে ঘর মেরামতের কাজ কিছুটা হলেও করতে পারবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে ভোলার তিনটি ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত ৩৪৭টি পরিবারকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৬ হাজার টাকা করে সহায়তা করেছে কোস্ট ফাউন্ডেশন স্টাট ফান্ড। ঘূর্ণিঝড়–পরবর্তী প্রভাব মোকাবিলাসংক্রান্ত একটি প্রকল্পের অংশ হিসেবে এসব টাকা দেওয়া হয়।
লালমোহন উপজেলার ধলী গৌরনগর ইউনিয়নে বাসিন্দা নুরুল ইসলাম ছয় হাজার টাকা পাওয়ার খবরে প্রায় কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, তিন দিন ধরে সপরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন। ঝড়বৃষ্টি থামার পরে বাড়িতে এসে দেখেন, ভিটেমাটি সব ভেসে গেছে। হাতের কাছে পাওয়া টিন, কাঠ, মালসামানা খুটে এনে জমা করে ভিটেমাটি সংস্কার করছেন। কিন্তু থাকার জায়গা নেই, আপাতত প্রতিবেশীদের ঘরের বারান্দায় রাত কাটান। খেয়ে না–খেয়ে দিন কাটছিল। ঈদের আগে ছয় হাজার টাকা পেয়ে একটু চিন্তামুক্ত হলেন তিনি।
একই ইউনিয়নের মো. নুরুজ্জামান (৮০) ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের একজন। এ ছাড়া তিনি একজন শ্রবণপ্রতিবন্ধী। ঘূর্ণিঝড়ে পুরোপুরি ভেঙে যাওয়া ঘর মেরামত করতে পারেননি। মোবাইলে এই টাকা পেয়ে তিনিও বেশ আনন্দিত।
গত ২৬ মে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। এতে ভোলা জেলার প্রায় ২ হাজার ৪৬৫ পরিবারের ঘর সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি ইউনিয়নের ১ হাজার ৪০০ পরিবারকে ৬ হাজার টাকা দেওয়া হবে। আজ রোববার চরফ্যাশন উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নের ৮৫, নজরুলনগর ইউনিয়নে ৯৭, লালমোহন উপজেলার ধলী গৌরনগর ইউনিয়নের ১০২, ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ৬৩টি পরিবারসহ মোট ৩৪৭টি পরিবারকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৬ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়।