নোয়াখালীতে চলছে পুষ্টি-প্রথম আলো বিতর্ক উৎসব

জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে নোয়াখালীতে শুরু হয়েছে পুষ্টি-প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক উৎসবের আঞ্চলিক পর্ব। আজ শুক্রবার সকালে জেলা শহরের মাইজদী বালিকা বিদ্যানিকেতনের মিলনায়তনে
ছবি: প্রথম আলো

‘যোগ দাও যুক্তির মেলায়’ স্লোগান নিয়ে নোয়াখালীতে চলছে পুষ্টি-প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক উৎসব। শ্রাবণের রৌদ্রোজ্জ্বল সকালে নিজ নিজ দলের শিক্ষকদের নেতৃত্বে খুদে বিতার্কিকেরা হাজির হয়েছে জেলা শহরের মাইজদী বালিকা বিদ্যানিকেতনে। আঞ্চলিক এই বিতর্ক উৎসবে বিজয়ের মুকুট পরে জাতীয় পর্বে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে যুক্তির লড়াইয়ে নেমেছে তারা।

আজ শুক্রবার সকালে মাইজদী বালিকা বিদ্যানিকেতনের মিলনায়তনে সকাল নয়টায় একদল শিক্ষার্থীর জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে বিতর্ক উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এ বি এম ফজলুল হক।

উদ্বোধনী বক্তৃতায় ফজলুল হক বলেন, ‘প্রথম আলো একটি বহুমাত্রিক প্রতিষ্ঠান। প্রথম আলোর নানা সংবাদ নিয়ে যখন বিতর্ক সৃষ্টি হয়, তখন আমরা বুঝি প্রথম আলো সঠিক পথে আছে, সত্য সংবাদ উপস্থাপন করেছে। দেশের তরুণসমাজকে এগিয়ে নিতে প্রথম আলো ধারাবাহিকভাবে যে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে, তার একটি হলো এই বিতর্ক উৎসব।’

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘যারা আজকের এই বিতর্ক উৎসবে যোগ দিয়েছ, তোমরা নিজেদের যুক্তিতর্ক দিয়ে নিজের দল ও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নেবে। আর এভাবে এগিয়ে নেবে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে, যে মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য আমরা লড়াই করেছি ১৯৭১ সালে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল কাইয়ুম মাসুদ, ফেনী ন্যাশনাল কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল হালিম, নোয়াখালী জিলা স্কুলের সাবেক সহকারী প্রধান শিক্ষক মাহফুজের রহমান, স্বাগতিক মাইজদী বালিকা বিদ্যানিকেতনের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মো. কামাল উদ্দীন, নোয়াখালী নারী অধিকার জোটের সভাপতি লায়লা পারভীন প্রমুখ। বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক আশিফ আহমেদের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন নোয়াখালীতে কর্মরত প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক এফ এ এম মাহবুবুর রহমান।

দিনব্যাপী বিতর্ক উৎসবে নোয়াখালী ও ফেনী জেলার ১৩টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে

মাদকের কুফল সম্পর্কে অনুষ্ঠানে আবদুল কাইয়ুম বলেন, আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনে দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। সে জন্য তাদের সেভাবে প্রস্তুত করতে হবে। কারণ, মাদকের কবলে পড়ে অনেক মেধাবী অকালে ঝরে পড়ে। আজকাল কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থীকেও মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। যে শিক্ষার্থী মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে, সে নিজের জীবন ও পরিবারকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। তাই সবাইকে মাদক থেকে দূরে থাকতে হবে।

দিনব্যাপী উৎসবে নোয়াখালী ও ফেনী জেলার ১৩টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। বিকেল পাঁচটায় সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উৎসব শেষ হবে।

বিতর্ক উৎসবে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল কাইয়ুম, রুবেল মিয়া ও মহিনুজ্জামান; নোয়াখালী সরকারি কলেজের শিক্ষক আবদুল মতিন, আরিফুর রহমান, মোহাম্মদ সোলাইমান ও রোখসানা আহমেদ; নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) ডিবেটিং ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাকিব সালিম ও হৃদয় কুমার ঘোষ; আউসকান্দি রশিদিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক শাহীন আক্তার; প্রভাতী শিশুশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক লায়লা তারেক; নোয়াখালী নারী অধিকার জোটের সভাপতি লায়লা পারভীন; নোয়াখালী জিলা স্কুলের সাবেক সহকারী প্রধান শিক্ষক মাহফুজের রহমান; নোয়াখালী বন্ধুসভার সাবেক সভাপতি সুমন নূর; জে কে মডেল স্কুলের শিক্ষক নাছরিন সুলতানা এবং নোবিপ্রবি ডিবেটিং সোসাইটির স্কুল ও কলেজ বিতর্কবিষয়ক সম্পাদক শামস উদ্দিন চৌধুরী।

১৪ জুলাই থেকে পুষ্টির পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রথম আলোর উদ্যোগে খুলনা ও রংপুরে এ স্কুল বিতর্ক উৎসব শুরু হয়। দেশের ৩৯টি অঞ্চলে এ উৎসব হচ্ছে। আঞ্চলিক পর্যায়ের বিজয়ীরা ঢাকায় জাতীয় পর্বে অংশ নেবে। প্রথম আলো বন্ধুসভার সহযোগিতায় এ প্রতিযোগিতার প্রচার সহযোগী নাগরিক টিভি।