’১৮ সালের মতো ‘রাতের ভোটের রেফারি’ হতে চান—চুন্নুকে প্রশ্ন স্বতন্ত্র প্রার্থীর

পথসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন গোলাম কবির ভূঁইয়া (বাঁয়ে) ও মুজিবুল হক চুন্নু
ছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জ-৩ (তাড়াইল-করিমগঞ্জ) আসনের প্রার্থী ও জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে ‘রাতের ভোটের রেফারি’ মন্তব্য করে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রমবিষয়ক সম্পাদক গোলাম কবির ভূঁইয়া প্রশ্ন রেখেছেন, ‘ও ভাই, খালি মাঠে খেলতে চান? ’১৮ সালের লাহান (মতো) রাইতের রেফারি করতে চান? পুলিশ-দফাদার দিয়ে রেফারি করতে চান? তাড়াইল-করিমগঞ্জের মাইনষের ওপরে আপনার বিশ্বাস নাই। আপনার বিশ্বাস হইল রাইতের ভোটের বিশ্বাস।’

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার ঝাউতলা বাজারে গত রোববার রাতে এক নির্বাচনী পথসভায় গোলাম কবির ভূঁইয়া এসব কথা বলেন। পথসভায় দেওয়া বক্তৃতা তিনি নিজের ফেসবুকে সরাসরি (লাইভ) সম্প্রচার করেন। ওই বক্তব্যের জবাবে মুজিবুল হক প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘গোলাম কবির সুস্থ থাকলে এটা কোনোভাবেই তিনি বলতেন না।’

কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে গোলাম কবির ভূঁইয়া (কেটলি) ছাড়াও আওয়ামী লীগের আরও দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন। তাঁরা হলেন নিউইয়র্ক আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহফুজুল হক (ঈগল) ও মেজর (অব.) মো. নাসিমুল হক (কাঁচি)। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদ। জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন সমঝোতায় তাঁর মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয় আওয়ামী লীগ। স্থানীয় আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে মাঠে আছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম কবির ভূঁইয়া।

পথসভায় গোলাম কবির ভূঁইয়া বলেন, ‘বিভিন্ন কূট, চালাকি করে আমাদের সাংসদ (সংসদ সদস্য) মুজিবুল হক চুন্নু ভাই আজকে নৌকাকে বিভিন্নভাবে কারারুদ্ধ করে রেখেছেন। আমি মাননীয় সাংসদকে বলতে চাই, খেলায় আসবেন, খেলতে আসেন। খেলার আগেই ভয় পাইয়েন না। পোস্টার একখান ছাপাইছুন, জাতীয় পার্টি মনোনীত, আওয়ামী লীগের সমর্থিত। ও ভাই, খালি মাঠে খেলতে চান? ’১৮ সালের লাহান (মতো) রাইতের রেফারি করতে চান? পুলিশ আর দফাদার দিয়ে রেফারি করতে চান? তাড়াইল-করিমগঞ্জের মাইনষের ওপরে আপনার বিশ্বাস নাই। আপনার বিশ্বাস হইল রাইতের ভোটের বিশ্বাস।’

গোলাম কবির ভূঁইয়া

গোলাম কবির আরও বলেন, ‘খেলা কীভাবে হইব? খেলা হইব, রেফারি কিন্তু রাইতের ভোট না। রেফারি হইল বাংলার জনগণ, তাড়াইল-করিমগঞ্জের জনগণ। বাঁশি তাঁরার ধারও, কার্ডও তাঁরার ধারও। তাঁরা এবার কার্ড দেহাইয়া দিব। সময় আসতেছে ৭ তারিখ নাগাদ। দাবি একটাই আপনার কাছে, ভেলকি তো বহুত মারছন, ৭ তারিখের আগে আর কোনো ভেলকি যেন না দেহান। মাঠটার মধ্যে খাড়াইয়া থাহন, দেখতাম চাই, পায়ের জোর কতটুক আছে আর খেলার জোর কতটুক আছে।’

জাপা মহাসচিবের প্রচারণার কথা উল্লেখ করে গোলাম কবির ভূঁইয়া বলেন, ‘কালকে একটা মিটিং হইছে, চেয়ার দিছে ছয় শ, মানুষ হইছে দুই শ। গাড়ি একটা লইয়া বাইর হইছে, হোন্ডা হইল বিশটা। এই মানুষটি লইয়া এইনো-হেইনো যাইতাছে। কোন দিন যে কইব, তার নেতা এরশাদ সাব যায়গা সিএমএইচ হাসপাতালে, জি এম কাদের যায়গা ঘরের ভেতরে, ঘরের ভেতরে গিয়েও খুঁইজ্যা পাওয়া যায় না। আপনারা যে কোনহানে যাইবেন, এই রাস্তাও আপনাদের খোলা নাই। আসেন খেলা হবে। কারণ, জননেত্রী শেখ হাসিনা এবার পরিষ্কার বলে দিছেন, একটা ব্যালটে যদি কেউ টাচ করে, একটা বুলেট আপনার ব্যবহার করা হবে।’

গোলাম কবিরের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে মুজিবুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিনি সুস্থ থাকলে এমন বক্তব্য দিতেন না। তিনি কী বলতে চেয়েছেন, এটা কী বুঝে বলেছেন? এর বাইরে আমি আর কিছু বলতে চাই না।’