বরিশালে গতকাল রোববার সকাল ছয়টা থেকে আজ সোমবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও তিন নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে বিভাগে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১২৯ জনে। এ সময়ে নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৮১ জন। এ নিয়ে বিভাগে চলতি বছর ডেঙ্গু রোগী ৩০ হাজার ছুঁই ছুঁই। বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এসব তথ্য দিয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ১২৯ জনের মধ্যে অক্টোবরের ১৫ দিনে মারা গেছেন ২৬ জন। আর আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৪৬৭ জন। গত জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৯৪০ জনে।
গত ২৪ ঘণ্টায় যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের মধ্যে তিনজনই নারী এবং তাঁরা সবাই মারা গেছেন বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে। তাঁরা হলেন বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার সুফলা মিস্ত্রি (২০), বানারীপাড়া উপজেলার মুক্তা বনিক (৪৬) ও বরগুনার আমতলী উপজেলার আসমা আক্তার (৩৩)।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, গত জুলাই মাস থেকে বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক হয়। এ সময় থেকে রোগী এবং মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। আগস্টে তা আরও বাড়ে। সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়ংকর রূপ নেয় এবং চলতি মাসেও তা অব্যাহত আছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, এ বছর ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে ৯৫ শতাংশই গ্রামের রোগী, যাঁরা স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মারা যাওয়া রোগীদের প্রায় ৯১ শতাংশের বয়স ৪০ থেকে ৭০ বছর। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে নারীদের সংখ্যা অর্ধেকের বেশি। তবে শিশুমৃত্যু খুবই কম।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল আজ সোমবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, এবার ডেঙ্গুর ভয়াবহতা কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না। বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গুর এমন ভয়াবহতা আর কখনো দেখা যায়নি। ২০১৯ সালে বিভাগে প্রথম ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। এর আগে কখনো স্থানীয়ভাবে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ারও ইতিহাস ছিল না। তিনি বলেন, এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রত্যন্ত গ্রামে ছড়িয়ে পড়ায় এটা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। আগে বড় শহরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বেশি ছিল। এবার পরিস্থিতি পুরোপুরি ভিন্ন। তাই এটা কবে নাগাদ নিয়ন্ত্রণে আসবে, তা অনিশ্চিত।