মাঠটিতে এত দিন স্থাপনা বা সীমানাপ্রাচীরও ছিল না। ড্রেসিংরুম নির্মাণের কারণে মাঠটি ঐতিহ্য হারাবে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী সার্কিট হাউস মাঠে খেলোয়াড়দের জন্য ড্রেসিংরুম নির্মাণ করা হচ্ছে। ময়মনসিংহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল আলম বলেন, সার্কিট হাউস মাঠের এক পাশে একাধিক কক্ষবিশিষ্ট একটি টিনশেড ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।
তবে বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনের সদস্যরা বলছেন, সার্কিট হাউস মাঠটি ময়মনসিংহবাসীর কাছে গৌরব ও ঐতিহ্যবাহী একটি নিদর্শন। এ মাঠে বছরজুড়ে চলে ক্রিকেটসহ অন্যান্য খেলা। এ ছাড়া মাঠে বড় বড় রাজনৈতিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মাঠটিতে এত দিন কোনো ধরনের স্থাপনা বা সীমানাপ্রাচীরও ছিল না। হঠাৎ করেই ড্রেসিংরুম নির্মাণের কারণে মাঠটি ঐতিহ্য হারাবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন।
গতকাল বুধবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, সার্কিট হাউস মাঠের পশ্চিম পাশে একটি টিনশেড ভবন নির্মাণের কাজ করছেন শ্রমিকেরা। ওই সময় কাজের তদারকি করতে দেখা যায় কয়েকজনকে। কথা বলে জানা যায়, ভবনের দৈর্ঘ্য হবে ৮০ ফুট ও আর প্রস্থ হবে ৩০ ফুট।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার অর্থায়নে নির্মাণ করা হচ্ছে এ ড্রেসিংরুম। গতকাল বুধবার বিকেলে ময়মনসিংহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম মুঠোফোনে বলেন, ময়মনসিংহ সার্কিট হাউস মাঠে একটি ড্রেসিং কক্ষ নির্মাণের দাবি অন্তত তিন যুগ ধরে। সাবেক খেলোয়াড়েরাও এ দাবি করেছেন। কিন্তু এত দিন নির্মাণ করা হয়নি। না বুঝে অনেকেই এর সমালোচনা করছেন।
সার্কিট হাউসে মাঠে খেলোয়াড়দের জন্য ড্রেসিংরুম নির্মাণের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে গত মঙ্গলবার তরুণ ক্রিকেটারসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ ‘আনন্দ বন্ধন’ নামের এক কর্মসূচি পালন করেছেন।
তবে ড্রেসিংরুম নির্মাণের সমালোচনাও করছেন অনেকে। পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন আন্দোলন নামের এক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শিব্বির আহমেদ বলেন, তাঁরা ময়মনসিংহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল আলমের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন সার্কিট হাউস মাঠে স্থাপনা নির্মাণ না করার।
তরুণ কবি ও সংগঠক শামীম আশরাফ বলেন, ‘গুটি কয় মানুষ ছাড়া ময়মনসিংহের বেশির ভাগ মানুষ চায় না সার্কিট হাউস মাঠে ড্রেসিংরুম নির্মাণ করা হোক। আমরা খেলাধুলার বিরুদ্ধে না। তবে মাঠের ঠিক এ জায়গায় ড্রেসিংরুমের জন্য ভবন নির্মাণ করা হলে মাঠটি ঐতিহ্য হারাবে।’
এ ব্যাপারে কথা বলতে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক ও ময়মনসিংহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মো. মোস্তাফিজার রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়। তিনি ফোন ধরেননি।