সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জামিন পাওয়ার পরদিন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকেও ছাড়পত্র পেয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। পরে দুপুরে তিনি হাসপাতাল ত্যাগ করেন এবং বেলা তিনটার দিকে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার বাড়িতে পৌঁছান।
এ সম্পর্কে হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক মন্ত্রী এম এ মান্নানের জামিন হয়েছে, এমন খবর পাওয়ার পর হাসপাতাল থেকেও ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। আজ বেলা ১টা ৫০ মিনিটের দিকে তিনি হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
সৌমিত্র চক্রবর্তী জানান, এম এ মান্নানের চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। তাঁর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ছিল না। এ ছাড়া তাঁর উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্রোগের সমস্যা ছিল। ইনসুলিন দেওয়ার পর তাঁর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কারামুক্তির প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর এম এ মান্নান প্রাইভেট কারে করে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হন। এম এ মান্নানের ব্যক্তিগত সহকারী জুয়েল আহমদ জানান, এম এ মান্নান বেলা তিনটায় তাঁর সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার বাড়িতে এসে পৌঁছেছেন।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গতকাল বুধবার সুনামগঞ্জ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন, এমন খবর পেয়েছিলাম। আজ সকালে সুনামগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে জামিনের কাগজপত্র সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছায়। তিনি এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে কাগজপত্রগুলো নিয়ে গিয়ে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষ করা হয়। আজ বেলা ১টা ৪০ মিনিটের পর থেকে তিনি কারামুক্ত হয়েছেন বলা যায়।’
গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে শান্তিগঞ্জ উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে এম এ মান্নানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত শনিবার তিনি সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রথমে তাঁকে জেলা সদর হাসপাতালে এবং পরে সিলেট কেন্দ্রীয় কারা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে গত মঙ্গলবার সকালে তাঁকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এম এ মান্নানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ ও মুক্তির দাবিতে শান্তিগঞ্জে সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। তবে তাঁর শাস্তির দাবিতে শান্তিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ শহরে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা একাধিবার বিক্ষোভ করেছেন।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরে ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা হয়। এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী জহুর আহমদের ভাই হাফিজ আহমদ বাদী হয়ে ২ সেপ্টেম্বর সদর মডেল থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা করেন। এ মামলায় এম এ মন্নানসহ ৯৯ জনকে আসামি করা হয়।