বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র

রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা-চুরির ঘটনায় ডাকাতির মামলা, গ্রেপ্তার ১২

বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে মালামাল চুরি ও নিরাপত্তাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে আনসার ব্যাটালিয়নের হাবিলদার মো. শহীদুল ইসলাম বাদী হয়ে ২০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৪০ জনকে আসামি করে থানায় ডাকাতির মামলা করেন।

ঘটনার পরপরই জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গতকাল সকালেই বিদ্যুৎকেন্দ্রসংলগ্ন রামপাল উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ১১ জন এবং গুলিবিদ্ধ হয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১ জনসহ মোট ১২ জনকে আটক করে পুলিশ। তাঁদের সবাইকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

গত বুধবার রাতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের আওতাধীন পিডিবির বি-ব্লক ম্যাটেরিয়াল ইয়ার্ডের ৩ নম্বর টাওয়ার এলাকা থেকে লোহার পাইপসহ মালামাল চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীরা বাধা দিলে তাঁদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বেসরকারি চার নিরাপত্তাকর্মীসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। এ সময় ৩০টি ফাঁকা গুলি ছোড়েন আনসার সদস্যরা।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বুধবার রাত ১০টার দিকে ৩ নম্বর টাওয়ারে বদলি দায়িত্ব হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রি সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেডের (এসএসএসএল) পুষ্পেন দেওয়ান ও আকরাম আলী। রাত ১০টা ১৫ মিনিটে ৫০ থেকে ৬০ জন ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্যকে দেশি অস্ত্র নিয়ে টাওয়ারের উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে প্রবেশ করতে দেখে চিৎকার দেন পুষ্পেন। তখন অন্য নিরাপত্তাকর্মীরা এগিয়ে এসে বাধা দিলে আসামিরা দেশি অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা করেন। খবর পেয়ে ১০টা ৪০ মিনিটে আনসার সদস্যরা সেখানে গেলে আসামিরা অতর্কিতে হামলা করে সঙ্গে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়া চেষ্টা করেন। তখন অস্ত্র ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় ৩০টি গুলি করলে আসামিরা বিভিন্ন আকারের দেড় হাজার কেজি লোহার রড ডাকাতি করে নিয়ে যান।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. মানিক শেখ (৩৫), মো. ফজলু গাজী (৫৫), মো. সালাম শেখ (৩০), মো. মনি গাজী ( ৪০), মো. নূরনবী শেখ (১৯), মো. আসাদ মোল্লা (৩৩), মো. আবদুল্লাহ (৩৩), মো. বায়োজিদ (৩৭), মো. রুবেল শেখ (২৬), মো. মানজুর গাজী (২৮), মো. আছাবুর গাজী (২৯)। তাঁদের সবার বাড়ি রামপালে। এর মধ্যে আছাবুর গাজী ছাড়া বাকি ১১ জনকে আজ শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আছাবুর গাজী পুলিশের পাহারায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৌমেন দাস প্রথম আলোকে বলেন, ডাকাতি, হামলা ও মালামাল লুটের ঘটনায় আনসার সদস্যের করা মামলায় এজাহারনামীয় ১১ জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার এক আসামি খুলনা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন। ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলমান।