মানিকগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও মারধরের ঘটনায় বিএনপি নেতার করা মামলায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাতে সদর উপজেলার নিজ নিজ বাড়ি থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ও দিঘী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম (৪৮) এবং জাগীর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হৃদয় (২৭)।
মামলাটির বাদী জেলা বিএনপির সহসভাপতি আজাদ হোসেন খান। তিনি ৮ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ২০ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতপরিচয় ১০০ থেকে ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি করেছিলেন।
মামলায় আসামিদের মধ্যে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান, কাজী এনায়েত হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সিফাত কোরাইশী ওরফে সুমন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক খান, সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক ওরফে রাজা, পৌর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মাহিদুল ইসলাম, যুবলীগের কর্মী ইরাদ কোরাইশী ওরফে ইমন, জুয়েল ভুঁইয়া ও মো. সানি এবং পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি অভিজিৎ সরকার।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৮ জুলাই সকালে আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের হত্যার উদ্দেশ্যে মানিকগঞ্জ খালপাড় মোড়ে জড়ো হন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কর্মসূচি সফল করার জন্য জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা একত্র হয়ে বিএনপির কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন। মামলার বাদী আজাদ হোসেন সেখানে যাওয়ার পথে আসামি কাজী এনায়েত হোসেনের নির্দেশে সিফাত কোরাইশী, জুয়েল ও ইমন তাঁর গতিরোধ করেন বলে তিনি এজাহারে লেখেন। এ সময় অন্য আসামিদের মদদে সিফাত কোরাইশী তাঁর হাতে থাকা শটগান দিয়ে আজাদ হোসেন খানকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করেন। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে আবারও গুলি করলে তা বের না হওয়ায় অপর আসামির হাত থেকে বাটাম নিয়ে সিফাত কোরাইশী বাদীকে এলোপাতাড়ি পেটান। অন্য আসামিরা তাঁদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেন। আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রেজাউর রহমান খান গুরুতর আহত হন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ বলেন, সোমবার রাতে সদর উপজেলার পাথরাইল গ্রাম থেকে আসামি কাশেম এবং জয়রা গ্রাম থেকে হৃদয়কে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে তিনি জানান।