চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাফজয়ী তিন নারী ফুটবলারকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। আজ বিকেলে
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাফজয়ী তিন নারী ফুটবলারকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। আজ বিকেলে

সাফজয়ী তিন নারী ফুটবলারকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবর্ধনা

সাফজয়ী তিন ফুটবলার ঋতুপর্ণা চাকমা, রুপনা চাকমা ও মনিকা চাকমাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের মিলনায়তনে এই আয়োজন হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জুম্ম শিক্ষার্থী পরিবারের ব্যানারে এই অনুষ্ঠান হয়।

বেলা তিনটায়  গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্যে দিয়ে এর কার্যক্রম শুরু হয়। পরে এই তিন কৃতী ফুটবলারকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানের আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে মনিকা চাকমা বলেন, ‘আমরা খুবই আনন্দিত, গর্বিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে সংবর্ধনা নিতে পারছি, এটাও আমাদের জন্য সৌভাগ্য। আমাদের জন্য সবাই আশীর্বাদ করবেন, সামনে যেন আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারি।’

ঋতুপর্ণা চাকমা বলেন, ‘আপনারে আমাদের এভাবে ভালোবেসে, সমর্থন দিয়ে পাশে থাকবেন। যেন আমরা ভবিষ্যতে এর থেকে বড় বড় বিজয় আপনাদের এবং বাংলাদেশকে উপহার দিতে পারি। শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয়, এশিয়া এবং ইউরোপের মধ্যেও যেন আমরা বড় টিম হিসেবে দাঁড়াতে পারি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ধন কিশোর ত্রিপুরা এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের কন্যাদের এই অবদান দেশের জন্য কূটনৈতিক অর্জন। এই স্বর্ণকন্যারা শুধু নিজেরাই জয়ী হয়নি, তারা আমাদের দেশকে জয়ী করেছে। তারা দেশকে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। জুম্ম শিক্ষার্থী পরিবার তাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আনতে পেরে অন্যতম সাহসের পরিচয় দিয়েছে।’

ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আনন্দ বিকাশ চাকমা বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমরা খবর কাগজের মধ্যে জেনেছি তাঁদের মধ্যে একজন ইউরোপে খেলার আমন্ত্রণ পেয়েছে। আমরা চাই ইউরোপে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মধ্যেও মহিলা মেসি সৃষ্টি হোক, মহিলা রোনালদো সৃষ্টি হোক। আমরা সিআর সেভেনের জায়গায় সিআর রুপনাকে পাব। আমরা সেই প্রত্যাশা রাখি। আশা করি, এই বিজয়ের ধারা অব্যাহত থাকবে।’

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রোনাল চাকমা বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম শিক্ষা, অর্থনীতি নানা দিক থেকে পিছিয়ে পড়া। আমরা যদি পর্যাপ্ত সুযোগ পাই, আমরা যদি বিকাশের উপযুক্ত পরিবেশ পাই তাহলে আমাদের পাহাড়ে, সমতলে সারা দেশে হাজারো রুপনা, ঋতুপর্ণা, মনিকাদের মতো তারকা তৈরি হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীর  তিষ্য চাকমা ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী কেরোলিনা চাকমা এই অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন।

নারীদের প্রীতি ফুটবল ম্যাচ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের ফুটবলের কেন্দ্রীয় কোনো দল নেই।  তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ফুটবল খেলায় উদ্বুদ্ধ করতে এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচেরও আয়োজন করেছিল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজকেরা। এতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ছাত্রী ও কাউখালী উপজেলা ফুটবল একাডেমির খেলোয়াড়রা অংশ নেন।

বিকেল পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আবদুর রব হলের খেলার মাঠে হওয়া এই খেলা উপভোগ করতে আসেন বিভিন্ন বিভাগের কয়েক শ শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীরা। এতে কাউখালী উপজেলা ফুটবল একাডেমি ৩-০ গোলে জেতে।