খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ‘আগে গরিবেরা আটার রুটি খেত। সেই সময় কেউ আটা কিনলে মনে করা হতো, তিনি সবচেয়ে গরিব মানুষ। এখন গরিবেরা তিন বেলা ভাত খায় আর যারা ধনী মানুষ, তারাই কিন্তু আটার রুটি খায়। সেটা ওজন বাড়ার ভয়ে হোক কিংবা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই হোক।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইলোতে সরকারি প্রিমিক্স কার্নেল ফ্যাক্টরির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘একসময় আমাদের খাদ্যের অভাব ছিল। অনেকেই তখন এক বেলা ভাত খেতেন। বিদেশ থেকে চাল আমদানি করে খেতে হতো। তখন ধারণা ছিল, গুদামের চাল মানেই গন্ধ চাল। আর এখন গুদামের চালের জন্য মানুষ লাইন ধরে।’
বর্তমানে চালের মান অনেক ভালো বলে উল্লেখ করে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘আগে খাদ্যে পুষ্টি মিশ্রণ করতে হতো না। এখন আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। খাদ্যের অভাবে কোনো মানুষ মারা গেছে, এমন ইতিহাস বাংলাদেশে নেই। শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এখন আমরা পাঁচ ছাঁটাই দেওয়ার পর চাল চকচকে করে খাই। সেখানে চালে শুধু কার্বোহাইড্রেট ছাড়া কিছুই থাকে না। সেই কারণে আমাদের পুষ্টিগুণ সংমিশ্রণ করে আমাদের বিতরণ করতে হচ্ছে। এতে অবশ্য ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বেড়েছে।’ তিনি বলেন, ‘পাঁচটা ছাঁটাই করে চকচক করার জন্য কিন্তু শুধু ছাঁটাই করলেই হয় না; পিচ্ছিল করতে স্যালাইন ওয়াটার ড্রপ বাই ড্রপ দিতে হয়। আর না হলে ইউরিয়া সার গুলিয়ে স্যালাইন ওয়াটারের ব্যাগের ভেতরে এক ফোঁটা দিয়ে পানি শুকানো সেই চাল আমরা খাচ্ছি। অতএব, আমরা এই ছাঁটাই চাল বন্ধ করতে চাই।’
খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা আগে এক ছাঁটাইয়ের চাল খেতাম। যার কারণে আমাদের এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে, এক ছাঁটাই বা দুই ছাঁটাইয়ের বেশি চাল ছাঁটাই করা যাবে না, তাতে পুষ্টিগুণ ঠিক থাকে। এই চিন্তাভাবনায় আমরা আছি। সেভাবে আমাদের আইনও তৈরি করা হয়েছে, বিধিমালা হচ্ছে, এখন নীতিমালা আমরা ছড়িয়ে দেব। আশা করছি, আগামী জুলাই মাসে সব মিলমালিককে ডেকে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।’
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসমাইল হোসেন, খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আবদুল্লাহ্ আল মামুন, র্যাব-১১-এর অধিনায়ক তানভীর মাহমুদ পাশা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আমীর খসরু, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।