চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার সুজাতপুর গ্রামে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ মিলি আক্তারের (২০) ওপর অ্যাসিড ছোড়ার ঘটনায় মো. জাহিদ (২০) নামের আরেক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানা এলাকার একটি ভাঙারির দোকান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার জাহিদ মতলব উত্তর উপজেলার সুজাতপুর গ্রামের মো. শাহাজাহান মিয়ার ছেলে। তিনি এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার প্রধান আসামি সুজাতপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম (২৫) ওরফে মানিকের ঘনিষ্ঠজন তিনি। এ নিয়ে এ ঘটনায় মোট দুজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
মতলব উত্তর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল নিয়ে গতকাল দিবাগত রাত দুইটায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানা এলাকায় যায়। সেখানকার পুলিশের সহায়তায় বন্দর থানা এলাকার একটি ভাঙারি দোকানে অভিযান চালিয়ে জাহিদকে আটক করে মতলব উত্তর থানায় নিয়ে আসে। পরে এ ঘটনায় করা মামলায় জাহিদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এসআই মিজানুর রহমান বলেন, জাহিদকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আজ বিকেলে তাঁকে চাঁদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করা হবে। এ ঘটনায় জাহিদসহ মোট দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মামলার প্রধান আসামি শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুদিনের রিমান্ডে শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। আবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ২৬ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে বসতঘরের দরজা দিয়ে মিলি ও তাঁর মা রাশেদা বেগমের ওপর অ্যাসিড ছুড়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। অ্যাসিডে মিলির মুখ, বুক, পিঠ, ডান হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। তাঁর মা রাশেদা বেগমের ডান হাত, বুক ও উরুও ঝলসে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় স্বজনেরা তাঁদের উদ্ধার করে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় মিলির বাবা আইয়ুব আলী বাদী হয়ে সুজাতপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম ও তাঁর সহযোগী প্রবাসী মো. বাদলকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। এ ছাড়া ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে ৩ মার্চ প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ও স্থানীয় বন্ধুসভার কর্মীদের সহযোগিতায় সুজাতপুর বাজার এলাকায় মানববন্ধন করা হয়।