নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় ভিজিএফের চালের ভাগ না দেওয়ায় মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাসুদ রানাকে এক ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় ইউপি কার্যালয়ের সিসিটিভি ক্যামেরা ও আসবাব ভাঙচুর এবং লক্ষাধিক টাকা ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে চেয়ারম্যানের অভিযোগ।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানা ও ইউপি সদস্য আনিছুর ফারুক দুজনই হাসপাতালে ভর্তি হন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান আজ বুধবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, মথুরাপুর ইউপির ঘটনায় দুই পক্ষই থানায় অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক এস এম তৌফিক মান্নান, ইউপি সদস্য আনিছুরসহ ১২৫ থেকে ১৫০ জন তাঁর ইউপি কার্যালয়ে আসেন। তাঁরা সংসদ সদস্যের পক্ষ থেকে ভিজিএফের ৪০ শতাংশ চাল তাঁদের দেওয়ার দাবি করেন। আমরা তাঁদের সংসদ সদস্যের ৪০ শতাংশ বরাদ্দের সুবিধাভোগীর তালিকা দিতে বলেছি। তাঁরা তালিকা নয়, সরাসরি চাল নেবেন বলে জানান। কিন্তু এভাবে সরাসরি চাল নিয়ে গেলে বিশৃঙ্খলা হবে। চাল দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁরা আমাকে ও হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর আরিফুল ইসলামকে মারধর করেছেন। এ ছাড়া ইউপি কার্যালয়ের সিসিটিভি ক্যামেরা ও আসবাব ভাঙচুর এবং আমার ১ লাখ ২৩ হাজার টাকা ও মুঠোফোন লুট করেছেন। এ ঘটনাটি নওগাঁর ডিসি ও বদলগাছীর ভারপ্রাপ্ত ইউএনওকে জানিয়েছি। তাঁরা আমাকে আইনগত পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।’
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আনিছুরের মুঠোফোন নম্বরে কল দিলেও তিনি সাড়া দেননি। আরেক অভিযুক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক এস এম তৌফিক মান্নান বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে ইউপি সদস্য আনিছুরের দ্বন্দ্ব চলছে। এ কারণে আনিছুরকে ঈদের ভিজিএফ বরাদ্দ দেননি। এ বিষয়ে জানতে গেলে ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানা তাঁকে মারধর করেন। আনিছুর গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। সংসদ সদস্যের ভিজিএফের বরাদ্দের চাল চাওয়ার ঘটনাটি সঠিক নয় বলে তিনি দাবি করেন।
বদলগাছীর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ময়নুল ইসলাম বলেন, ভিজিএফের বরাদ্দ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সুবিধাভোগীর তালিকা করা হয়। সুবিধাভোগীদের জন্য ইউপি কার্যালয় থেকে চাল বিতরণ করা হয়। সরাসরি কোনো কোটা নেই। তবে ইউপি চেয়ারম্যানরা সমন্বয় করে এ চাল বিতরণ করেন।