ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ফেরিঘাট গতকাল শনিবার পর্যন্ত চালু হয়নি। গত রোববার ৭ নম্বর ফেরিঘাটের সংযোগ সড়কের মাথা ধসে পন্টুনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন দৌলতদিয়ায় মাত্র দুটি ঘাট সচল রয়েছে। এ অবস্থায় আসন্ন ঈদযাত্রায় যাত্রীরা ভোগান্তি পোহাবে বলে আশঙ্কা করছেন ঘাটের কর্মীরা।
ফেরিঘাট সংযোগ সড়ক বা ঘাট তদারকের দায়িত্ব বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ)। আর র্যামসহ পন্টুনের (যেখানে ফেরি ভেড়ে) দায়িত্ব বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি)।
ক্ষতিগ্রস্ত ফেরিঘাট সড়ক মেরামতের জন্য বিআইডব্লিউটিএ কাজ করছে। ইটের আদলা ফেলাসহ বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে প্রস্তুত করছে। তবে বিআইডব্লিউটিসি পন্টুন না সরিয়ে নেওয়ায় সে জায়গায় কাজ করতে পারছেন না শ্রমিকেরা। এর ফলে কত দিন পর ঘাটটি চালু হতে পারে, নির্দিষ্ট করে কোনো প্রতিষ্ঠান বলতে পারছে না। বিআইডব্লিউটিএর দাবি, পন্টুনটি সরিয়ে ফেলা হলে তিন দিনের মধ্যে ঘাটটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত করা সম্ভব। বর্তমানে ৩ ও ৪ নম্বর ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার অব্যাহত রয়েছে।
গতকাল শুক্রবার সকালে দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ঘাটে দেখা যায়, বিআইডব্লিউটিএর তিন-চারজন শ্রমিক ইটের আদলা বস্তায় ভর্তি করে সংযোগ সড়কের মাথায় ফেলছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পন্টুন এক পাশে কাত হয়ে আছে। এর ফলে ঘাট দিয়ে কোনো যানবাহন পারাপার করা যাচ্ছে না।
অপেক্ষমাণ ঢাকাগামী জামান পরিবহনের দৌলতদিয়া ঘাট তত্ত্বাবধায়ক মনির হোসেন বলেন, আগে যখন অনেক গাড়ির চাপ ছিল, তখন সব সময় চার-পাঁচটি ঘাট চালু থাকত। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এখন আগের মতো গাড়ির চাপ নেই। তারপরও অন্তত তিনটি ঘাট সচল থাকা দরকার। সেখানে মাত্র দুটি ঘাট সচল রয়েছে। আর কিছুদিন পর ঈদযাত্রা শুরু হবে। তখন ভিড় আরও বাড়বে।
স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ী খোরশেদ মণ্ডল বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের আগের দিন রাতে ঘাট বন্ধ হয়। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত চালু না হওয়ায় আমরা বেকার বসে আছি। গাড়ি বা যাত্রী পারাপার না হওয়ায় কোনো দোকানে বেচাকেনা নেই। যে কারণে ঘাটের প্রায় ২০টি দোকানের সবার রোজগার বন্ধ।’
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ৭ নম্বর ঘাটের সংযোগ সড়কসহ পন্টুন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁরা বিআইডব্লিউটিএকে ঘাটটি দ্রুত প্রস্তুত করে দিতে অনুরোধ করেছেন। ঘাট প্রস্তুত হলেই যানবাহন পারাপার শুরু হবে। তবে পন্টুন সরাতে কিছু সময় লাগছে।
বিআইডব্লিউটিএর দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ইটের আদলা ও বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে সংযোগ সড়ক অনেকটা প্রস্তুত করেছি। পন্টুনটি না সরানোর কারণে অবশিষ্ট কাজ করতে বিলম্ব হচ্ছে। বিআইডব্লিউটিসি তাদের পন্টুনটি সরিয়ে ফেললে মাত্র তিন দিনের মধ্যে আমরা ঘাটটি প্রস্তুত করতে পারব।’