আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে শোকজ

মাহিয়া মাহি
ছবি: প্রথম আলো

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে (শারমিন আক্তার নিপা) কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। নোটিশে আগামী রোববার বেলা ১১টায় অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সশরীর হাজির হয়ে তাঁকে এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

রাজশাহী-১ আসনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গঠন করা নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. আবু সাঈদ স্বাক্ষরিত নোটিশ আজ শুক্রবার চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে পাঠানো হয়। মাহি নিজেই নোটিশ পাওয়ার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

কারণ দর্শানোর নোটিশে উল্লেখ করা হয়, আচরণবিধি লঙ্ঘন করে গতকাল বৃহস্পতিবার গোদাগাড়ীর চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নে মাহিয়া মাহি ভোটের প্রচারণা চালান এবং ভোটারদের কাছে ভোট চান। এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রচারিত হয়েছে এবং মাহিয়া মাহি নিজেই ফেসবুকে প্রচার করেন। বিষয়টি নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির নজরে এসেছে। ওই আচরণের মাধ্যমে মাহিয়া মাহি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা ২০০৮-এর বিধি ৬(ঘ) ও ১২ ধারা লঙ্ঘন করেছেন, যা নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম হিসেবে গণ্য হয়েছে।

এ ব্যাপারে কেন তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে না, তা ১৭ ডিসেম্বর অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সশরীর হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে নোটিশে।

মাহিয়া মাহি

নির্বাচনী আচরণবিধির ৬(ঘ) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা দল মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাঁদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি জনগণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে, এমন কোনো সড়কে জনসভা কিংবা পথসভা করতে পারবেন না। আর আচরণবিধির ১২ ধারা অনুযায়ী, ভোট গ্রহণের নির্ধারিত দিনের তিন সপ্তাহ আগে কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী প্রচারণা শুরু করতে পারবেন না।

কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছেন জানিয়ে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি বলেন, নির্বাচনের একজন প্রার্থী হিসেবে তাঁকে নির্বাচনী এলাকায় যেতেই হবে। তিনি গিয়েছিলেন। তাঁকে দেখে অনেক মানুষ এসেছিলেন। যে সাংবাদিকেরা প্রতিবেদন করেছেন, তাঁরা সরেজমিনে যাননি। তাঁরা শিরোনামে ভোট চাওয়ার কথা বললেও প্রতিবেদনের ভেতরে দোয়া চাওয়ার কথা বলেছেন। তিনি ভোট চাননি, আচরণবিধি লঙ্ঘনও করেননি। তিনি বলেন, একটি পক্ষ চাচ্ছে, মাহির নির্বাচনী এলাকায় যাওয়া বাধাগ্রস্ত হোক। নির্ধারিত দিনে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দেওয়া হবে।

নির্বাচনে অংশ নিতে প্রথমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। কিন্তু সেই আসন থেকে তিনি মনোনয়ন পাননি। দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে তিনি রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

কিন্তু এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরের গরমিলে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিলের পর প্রার্থিতা ফিরে পান এই চিত্রনায়িকা।