বর্ধিত বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা পাথারপার এলাকায়
বর্ধিত বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা পাথারপার এলাকায়

সরকার ঘোষিত বেতনের দাবিতে শ্রীপুরে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

সরকার ঘোষিত নতুন বর্ধিত বেতনের দাবিতে গাজীপুরের শ্রীপুরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শ্রীপুরের মাওনা পাথারপার এলাকায় মাওনা-ফুলবাড়িয়া সড়ক অবরোধ করে তাঁরা কর্মসূচি পালন করেন।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ্ জামান বলেন, শ্রমিক আন্দোলনের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। পরে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস পেয়ে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছেন।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিক, কারখানা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মাওনা এলাকার ক্রাউন এক্সক্লুসিভ ওয়্যার লিমিটেড, ক্রাউন মিলস লিমিটেডসহ তিনটি কারখানার হাজারখানেক শ্রমিক নতুন বর্ধিত বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। ওই তিনটি কারখানার পাশাপাশি অন্য কারখানার শ্রমিকেরাও বিক্ষোভে অংশ নেন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কারখানাগুলোর সামনে পাথারপার এলাকায় মাওনা-ফুলবাড়িয়া সড়ক অবরোধ করেন। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মাওনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ঘটনাস্থলে এসে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে মালিকপক্ষ ও পুলিশ বর্ধিত বেতন দেওয়ার আশ্বাস দিলে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শ্রমিকেরা সড়ক থেকে সরে যান।

শ্রমিকদের ভাষ্য, কারখানা কর্তৃপক্ষ সরকার ঘোষিত বর্ধিত বেতন দিচ্ছে না, নানা টালবাহানা করছে। বর্ধিত বেতন না পেয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ফলে তাঁরা দাবির পক্ষে সড়কে নেমে এসেছেন।

ক্রাউন এক্সক্লুসিভ ওয়্যার কারখানার শ্রমিক মো. নাজমুল হাসান বলেন, সরকার ও মালিকপক্ষ সমন্বয় করে পোশাক শ্রমিকদের জীবনমানের কথা চিন্তা করে বেতন বর্ধিত করেছে। আশপাশের অন্য সব পোশাক কারখানা বর্ধিত বেতন দিচ্ছে। কিন্তু তাঁদের কারখানার কর্তৃপক্ষ বর্ধিত বেতন দেয়নি।

ক্রাউন মিলস লিমিটেডের শ্রমিক মিজানুর রহমান বলেন, বর্ধিত বেতন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েও মালিকপক্ষ তাদের কথা রক্ষা করেনি। ৭ জানুয়ারি বর্ধিত বেতন না দিয়ে নিয়মিত বেতন দেয়। এতে শ্রমিকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনে নেমেছেন। তিনি আরও বলেন, বর্ধিত বেতনে একজন শ্রমিকের ন্যূনতম বেতন ১২ হাজার ৫০০ টাকা পাওয়ার কথা।

একই কারখানার অপর শ্রমিক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান ও পুলিশের আশ্বাস পেয়ে শ্রমিকেরা আপাতত কাজে যোগ দিয়েছেন। আশ্বাস বাস্তবায়িত না হলে আবারও আন্দোলন হতে পারে।

বর্ধিত বেতন না দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে ক্রাউন মিলস লিমিটেডের মানবসম্পদ কর্মকর্তা এম আজাদের মুঠোফোনে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি।

এই বিষয়ে মাওনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম মুঠোফোনে বলেন, তিনটি কারখানার মালিক একজন। বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে আছেন। দেশে এলেই শ্রমিকদের বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলা হবে। যাবতীয় বেতন পরিশোধ করা হবে। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা আন্দোলন স্থগিত করে কাজে যোগ দিয়েছেন।