গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের দর্শক সারি থেকে তুলে নিয়ে মো. আবদুল্লাহ (২৬) নামের এক পোশাকশ্রমিককে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের বাঁশবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আবদুল্লাহ শ্রীপুরের বাঁশবাড়ি গ্রামের মো. শাহাদাত হোসেনের ছেলে। তিনি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় টিএম বিডি লিমিটেড নামের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন।
বাঁশবাড়ি গ্রামের মো. শহীদের (৩৫) বিরুদ্ধে ওই তরুণকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত আবদুল্লাহর বাবার সঙ্গে জমি ও টাকাপয়সা নিয়ে শহীদের বিরোধ ছিল বলে জানা গেছে। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ জামান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনার বর্ণনায় স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে বাঁশবাড়ি বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে ছিলেন আবদুল্লাহ। তখন সেখানে শহীদ আসেন। তাঁদের দুজনের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দোকানের সামনে তাঁরা ধস্তাধস্তি করেন। স্থানীয় লোকজন দুজনকে থামিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেন। এর আধা ঘণ্টা পর বাঁশবাড়ি বাজারের পূর্ব পাশে একটি বিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে যান আবদুল্লাহ। তখন শহীদ তাঁকে সেখান থেকে তুলে নিয়ে পাশে একটি স্থানে নিয়ে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। আহত অবস্থায় আবদুল্লাহকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বাঁশবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মো. ওমর ফারুক জানান, চিৎকার শুনে বাজারের পাশে একটি জায়গায় গিয়ে আবদুল্লাহ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। ওমর ফারুক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে বলেন, ছুরি দেখিয়ে জোর করে আবদুল্লাহকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের দর্শক সারি থেকে তুলে নিয়ে যান শহীদ।
নিহত ব্যক্তির বাবা মো. শাহাদাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জমি কিনে দিতে শহীদকে তিনি পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু জমি কিনে না দিয়ে তাঁর সঙ্গে টালবাহানা করছিলেন। এসব বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে তাঁর ছেলেকে শহীদ ছুরিকাঘাতে করে হত্যা করেছেন।
অভিযুক্ত মো. শহীদ ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। শ্রীপুর থানার ওসি শাহ্ জামান রাত সাড়ে নয়টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। ছুরিকাঘাতে আবদুল্লাহ নামের এক পোশাকশ্রমিককে হত্যা করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করছি। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’