চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন

আ.লীগে মনোনয়নপ্রত্যাশীর ছড়াছড়ি, আলোচনায় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চান মাহিয়া মাহি। সম্প্রতি তাঁর গণসংযোগ ও পথসভায় ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ
ছবি : সংগৃহীত

বিএনপির সংসদ সদস্য আমিনুল ইসলামের পদত্যাগে শূন্য হওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (ভোলাহাট-গোমস্তাপুর-নাচোল) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ব্যাপক তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৮ জনের দলীয় মনোনয়ন ফরম কেনার কথা জানা গেছে।

জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মু. জিয়াউর রহমান প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তিনি নিজেসহ এখন পর্যন্ত ১৮ জন ৩০ হাজার টাকা দিয়ে দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। তাঁদের মধ্যে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিসহ চার নারীও রয়েছেন।

জিয়াউর রহমান জানান, দলীয় মনোনয়ন ফরম কেনা ব্যক্তিদের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস, রাজশাহী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকার, গোমস্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হ‌ুমায়ূন রেজা, ভোলাহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাব্বুল হোসেন, ভোলাহাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সামাদ আছেন। নারীদের মধ্যে জেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সভাপতি হালিমা খাতুন, সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত আরা, নাচোল উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জান্নাতুন নাইম ও মাহিয়া মাহি রয়েছেন।

মাহিকে নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যের পর মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে কেউ আর মন্তব্য করতে রাজি হননি।

হঠাৎ করে এ আসনে চিত্রনায়িকা ও নাচোলের মেয়ে শারমিন আক্তারের (মাহিয়া মাহি) আগমনের বিষয়টি আলোচনার জন্ম দিয়েছে। মাহির মনোনয়ন ফরম কেনা নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের রাজনীতিতে এখন আলোচনার খোরাক বলে জানিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কয়েকজন নেতা-কর্মী।

নাচোল উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, এ আসনে আচমকাই মাহির আগমনে সর্বত্র নানা আলোচনা হচ্ছে। তাঁর গণসংযোগে দলের কোনো নেতা-কর্মীকে দেখা যায়নি। নেতা-কর্মীরা সমালোচনা করছেন ঠিকই, কিন্তু মনোনয়ন পেয়ে গেলে আবার তাঁর পাশেই ভিড় জমাবেন।

গোমস্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান নূহ এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাহির আগমনে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে ঠিকই। তবে আওয়ামী লীগের মতো বড় দলে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য অনেকেই ভিড় জমাবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দলে ও মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা, জনভিত্তি—এসব বিবেচনা করে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়ন দেবেন বলে বিশ্বাস করি।’

মাহিকে নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যের পর মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে কেউ আর মন্তব্য করতে রাজি হননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাঁদের একজন বলেন, ‘বিরূপ মন্তব্য করে নেতার রোষানলে পড়তে চাই না এই মুহূর্তে।’

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী, আগামী বছরের ১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদের শূন্য পাঁচটি আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। রাজশাহীর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের এই নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন এ ব্যাপারে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন।

২০ ডিসেম্বর জারি করা গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রিটার্নিং ও সহকারী কর্মকর্তার নিকট মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ আগামী ৫ জানুয়ারি, মনোনয়নপত্র বাছাই ৮ জানুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৫ জানুয়ারি এবং ১ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। জেলা নির্বাচন অফিসসহ নাচোল, গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে।