বান্দরবানের আলীকদমে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের প্রায় ২০০টি সেগুনগাছ কেটে পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে বন বিভাগের তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন রেঞ্জ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী, বিট কর্মকর্তা মোজাম্মেল ও বনপ্রহরী অলক সেন। বিভাগীয় তদন্তে সত্যতার প্রমাণ পাওয়া গেলে তিনজনকে স্থায়ীভাবে চাকরি থেকে অপসারণ করা হবে বলে গতকাল শুক্রবার দুপুরে লামা বিভাগী বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আরিফুল হক বেলাল জানিয়েছেন।
তবে আলীকদমের তৈনরেঞ্জ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেছেন, স্থানীয় একটি পাচার চক্র গাছগুলো গোপনে কেটে পাচার করে আবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁদের বিরুদ্ধে গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ দিয়েছেন। তাঁরা ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন।
সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকে রোপিত সেগুনগাছ কেটে পাচার করা হয় বলে বন বিভাগের তৈন রেঞ্জের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন হাবিবুর রহমান কালাম। লামা বাসিন্দা হাবিবুর রহমান কালামের অভিযোগে বলা হয়, রেফারফাঁড়ি বাজার থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে কাঁকড়াঝিরি ও দুপ্রোঝিরি ম্রোপাড়া এলাকায় নির্বিচার বন বিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ কেটে উজাড় করা হয়েছে। পাচারকারীরা পাহাড় কেটে রাস্তা নির্মাণ করে বিশাল বিশাল সেগুনগাছ কেটে নিয়ে গেছেন। কিন্তু স্থানীয় বন বিভাগের তৈন রেঞ্জের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানা সত্ত্বেও নীরব ভূমিকা পালন করেছেন। এতে প্রমাণিত যে তাঁদের যোগসাজশে সংরক্ষিত বনের কোটি টাকার পাচার করা হয়েছে।
তৈনরেঞ্জের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেছেন, কাঁকড়াঝিরি ও দুপ্রোঝিরির বনাঞ্চলের কিছু গাছ চুরি করে কেটে পাচার হয়েছে ঠিক। কিন্তু তাঁরা জানতেন না। ওই এলাকার দায়িত্বে থাকা বনপ্রহরী বিষয়টি তাঁদের জানাননি। পরে তাঁরা জানার পর তদন্ত করে দেখেছেন, পাচারকারীরা চুরি করে গাছ কেটে পাচার করে আবার ঊর্ধ্বতনদের কাছে বনাঞ্চল উজাড় হওয়ার অভিযোগও করেছেন। তবে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু গাছ উদ্ধার করা হয়েছে।
লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আরিফুল হক বেলাল বলেছেন, বিষয়টি জানার পর ৩০ এপ্রিল তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে রেঞ্জ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী, বিট কর্মকর্তা মোজাম্মেল ও একজন বনপ্রহরীকে রেঞ্জ থেকে প্রত্যাহার করে সমায়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।