৫০ বছর পর ফেনী-১ আসন ফিরে পেল আওয়ামী লীগ

ফেনী-১ আসনে জিতেছেন নৌকার প্রার্থী আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী
 ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ ৫০ বছর পর ফেনীর ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলা নিয়ে গঠিত ফেনী-১ আসন ফিরে পেয়েছে আওয়ামী লীগ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী ৫ প্রার্থীকে হারিয়ে বিপুল ভোটে জিতেছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ওরফে নাসিম।

নির্বাচনে আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী পেয়েছেন ১ লাখ ৮২ হাজার ৭৬০ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাহরিয়ার ইকবাল পেয়েছেন ৪ হাজার ১৯৫ ভোট। শাহরিয়ারসহ বাকি সব প্রতিদ্বন্দ্বী জামানত হারাচ্ছেন। গতকাল সোমবার সকালে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোছাম্মৎ শাহীনা আক্তার আনুষ্ঠানিকভাবে বেসরকারি ফলাফলে আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরীকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।

নির্বাচনের আগেই আসনটি আওয়ামী লীগের জন্য ছিল ‘নির্ভার’। জয় নিয়ে নিশ্চিত থাকলেও ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের নিয়ে যেতে নেতা-কর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে ঘুরেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। পথসভা, মিছিল, সমাবেশ, কেন্দ্র কমিটির সভা, জনসভা সবই করেছেন। এরপর কাঙ্ক্ষিত জয়ও পেয়েছেন।
এ নির্বাচনে ফেনী-১ আসনে নৌকার প্রার্থীর বিপরীতে শক্ত কোনো স্বতন্ত্র বা অন্য দলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মাঠে ছিলেন না বললেই চলে। জাতীয় পার্টির প্রার্থীও মাঠে বেশ দুর্বল ছিলেন। অন্য নামসর্বস্ব দলের প্রার্থীদের দু-চারজন কর্মীর প্রচারণা ভোটারদের চোখেই পড়েনি।

ফেনী-১ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী এবারই প্রথম নির্বাচন করেছেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রটোকল কর্মকর্তা। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যও ছিলেন তিনি।

এ আসনে ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দেশের খ্যাতিমান সাংবাদিক এবিএম মূসা জয়লাভ করেন। এরপর আসনটি আওয়ামী লীগের হাতছাড়া হয়ে যায়। ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে জিয়াউর রহমানের ‘জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল’ বা ‘জাগদল’ প্রার্থী লে. কর্নেল (অব.) জাফর ইমাম বীরবিক্রম নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে জাফর ইমাম জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়ে জয় পান। ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়া এ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে জয় পান জাসদের (ইনু) সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার।

৫০ বছর পর এ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য পেয়ে দলীয় নেতা-কর্মীরা উল্লসিত। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর প্রতিক্রিয়ায় আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার ওপর আস্থা রেখে নৌকা তুলে দিয়েছেন। এলাকার জনগণ আমাকে বিজয়ী করে প্রধানমন্ত্রীকে সেই উপহার তুলে দিয়েছেন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীরা এখানে ভোটের উৎসব তৈরি করেছেন। আমি দলীয় নির্বাচনী ইশতেহারের পাশাপাশি নিজ এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে আত্মনিয়োগ করব। এর আগেও যখনই সুযোগ পেয়েছি, এলাকার নানা ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ করেছি।’