টেকনাফে অপহৃত কিশোরকে ৩০ ঘণ্টা পর ছেড়ে দিল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা

টেকনাফে অপহরণের ৩০ ঘণ্টা পর আবদুর রহমানকে বাহারছড়া ইউনিয়নের বড়ডেইল পাহাড়ি এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়
 ছবি: প্রথম আলো

কক্সবাজারের টেকনাফে অপহৃত এক কিশোরকে ৩০ ঘণ্টা পর ছেড়ে দিয়েছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। আজ শনিবার বিকেলে উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের বড়ডেইল পাহাড়ি এলাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ এক কৃষক এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক নুর মোহাম্মদ।

অপহরণকারীদের কাছ থেকে মুক্তি পাওয়া ওই কিশোরের নাম আবদুর রহমান ওরফে আবছার (১৬)। সে বাহারছড়া ইউনিয়নের বড়ডেইল এলাকার মোহাম্মদ উল্লাহের ছেলে। বাহারছড়া ইউপির সাবেক এ ইউপি সদস্য বলেন, মুক্তিপণ দাবি করতে মোবাইল ফোন নম্বর পেতে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা আবদুর রহমানের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে। এতে সে আহত হয়েছে। আহত ওই কিশোরকে চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ মোহাম্মদ শরীফ ওরফে লেডু (৩৫) একই এলাকার সোনা আলীর ছেলে। তিনি পেশায় পানচাষি। তিনি এখনো কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ভুক্তভোগী কিশোর ও গুলিবিদ্ধ কৃষক সম্পর্কে মামা-ভাগনে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল শুক্রবার সকালে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের বড়ডেইল পাহাড়ি এলাকায় পানের বরজে কাজ করতে যান আবদুর রহমান ওরফে আবছার ও মোহাম্মদ শরীফ। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গহিন পাহাড় থেকে একদল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী অতর্কিতভাবে তাঁদের ওপর হামলা চালায়। পরে দুর্বৃত্তরা কিশোর আবদুর রহমান ওরফে আবছারকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ সময় ভয়ে পালাতে গিয়ে মোহাম্মদ শরীফ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন।

পরিদর্শক নুর মোহাম্মদ বলেন, ঘটনার পর থেকে অপহৃত কিশোর আবদুর রহমানকে উদ্ধার এবং এই অপহরণের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রাখে। পুলিশের সদস্যরা গহিন পাহাড়ে দূর্বৃত্তদের সম্ভাব্য গোপন আস্তানা ঘিরে ফেলে।এতে গ্রেপ্তার এড়াতে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা কৌশলের আশ্রয় নেয়। একপর্যায়ে শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তারা বাহারছড়া ইউনিয়নের বড়ডেইল পাহাড়ি এলাকায় আবদুর রহমানকে ছেড়ে দেয়। পরে সে লোকালয়ে এলে স্থানীয় ব্যক্তিরা তাঁকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

কিশোরের নিকটাত্মীয় ও বাহারছড়া ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য সৈয়দ হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী কিশোর হতদরিদ্র। তার পরিবারের স্বজনেরা কেউ মোবাইল ব্যবহার করেন না। এতে দুর্বৃত্তরা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য তাঁর পরিবারের সদস্যদের কাছে ফোন করতে পারেনি।

এ বিষয়ে বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক নুর মোহাম্মদ বলেন, এ ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।