গাজীপুর মহানগরের পূর্ব কলতাসুতি এলাকায় অ্যামাজন নিটওয়্যার কারখানায় অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রায় দুই ঘণ্টা পর সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহায়তায় ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট। আজ সোমবার দুটি কারখানার শ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার একপর্যায়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই কারখানায় অগ্নিসংযোগ করা হয়।
ফায়ার সার্ভিসের সদস্য ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুরের চক্রবর্তী এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা তৃতীয় দিনের মতো আজ সকাল নয়টা থেকে চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিলেন। একই দিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে পানিশাইল এলাকার ডরিন গার্মেন্টের শ্রমিকেরা জিরানী বাজার এলাকায় চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেন। একপর্যায়ে দুই কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডার জেরে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরপর শ্রমিকেরা দৌড়াদৌড়ি করে স্থানীয় কলতাসুতি এলাকার বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ঢুকে পড়লে স্থানীয় লোকজন শ্রমিকদের ধাওয়া দেন। এ সময় শ্রমিকেরা ভেবেছিলেন, পূর্ব কলতাসুতি এলাকার অ্যামাজন নিটওয়্যার কারখানার শ্রমিকেরা তাঁদের ধাওয়া করেছে। এই ধারণা থেকে শ্রমিকেরা বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অ্যামাজন নিটওয়্যার কারখানার ভেতরে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে আশপাশের লোকজন ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলেও তারা শ্রমিক উত্তেজনার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে যেতে পারছিল না। প্রায় দুই ঘণ্টা পর বেলা দেড়টার দিকে সেনাবাহিনী, শিল্প ও থানা-পুলিশের সহযোগিতায় কাশিমপুর ও কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ শুরু করে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বেলা পৌনে তিনটার দিকেও আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
ঢাকা জোন-৪, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মো. আলাউদ্দিন বলেন, কারখানায় আগুন লাগার খবর পেয়ে কালিয়াকৈর ও কাশিমপুর ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে আসে। এ সময় শ্রমিকদের উত্তেজনা থাকায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আগুনের কাছে যাওয়া যায়নি। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে এবং তাঁদের সহযোগিতায় আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। কারখানাটিতে সুতা ও সোয়েটার তৈরি করা হতো। আগুনে প্রায় সব মাল পুড়ে গেছে। অনেক মূল্যবান যন্ত্রপাতি পুড়ে গেছে। আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এলে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণ করা সম্ভব হবে।
কাশিমপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হানিফ বলেন, ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, শিল্প পুলিশ ও কাশিমপুর থানা–পুলিশ মোতায়েন আছে। আশপাশের পরিবেশও শান্ত আছে।