বগুড়া-৬ (সদর) আসনে ভোটারদের মধ্যে টাকা বিতরণের সময় জাতীয় পার্টির (জাপা) দুই নেতা-কর্মীকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছেন এলাকাবাসী। আজ শনিবার দুপুরে বগুড়া শহরের উত্তর চেলোপাড়া এলাকা থেকে তাঁদের আটক করা হয়। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তাঁদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সোপর্দ করা হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন বগুড়া শহর জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তাহের আকন্দ ও কর্মী দেবেক মিয়া। তাঁরা জাপার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ কবির আহম্মেদের (ঈগল প্রতীক) হয়ে টাকা বিতরণ করছিলেন বলে জানা গেছে। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ কবির আহম্মেদ টাকা বিতরণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বগুড়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ চন্দ্র সরকার প্রথম আলোকে বলেন, আটক দুই ব্যক্তি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তাঁরা জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ কবির আহম্মেদের সমর্থক। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা ১১টার দিকে জাপার নেতা আবু তাহের ও কর্মী দেবেক মিয়া শহরের উত্তর চেলোপাড়া লায়ন কমিউনিটি সেন্টারে এলাকার নারী ভোটারদের ডেকে এনে টাকা বিতরণ করছিলেন। এলাকাবাসী কমিউনিটি সেন্টারে গিয়ে নারী ভোটারদের জিজ্ঞাসা করে জানতে পারেন, একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ভোটারদের প্রভাবিত করতে জনপ্রতি ২০০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। তখন টাকা বিতরণে জড়িত তাহের ও দেবেককে আটক করেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ চন্দ্র সরকারের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল দল ঘটনাস্থলে গেলে আটক দুজনকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এলাকাবাসীর দাবি, আটক দুই ব্যক্তি ঈগল প্রতীকের হয়ে টাকার বিনিময়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছিলেন।
তবে ঈগল প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ কবির আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, আটক ব্যক্তিরা ঈগলের কর্মী নন। তা ছাড়া টাকার বিনিময়ে ভোট কেনার প্রশ্নই আসে না। ঈগলের মাঠ এমনিতেই চাঙা। সুষ্ঠু ভোট হলে ঈগলের বিজয় সুনিশ্চিত।
জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী আজিজ আহম্মেদ বলেন, আটক আবু তাহের আকন্দ শহর জাতীয় পার্টির সভাপতি। তবে বগুড়া শহর ও সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা লাঙ্গল প্রতীকের পক্ষে ভোট করছেন না বলে তিনি জানান।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, আটক দুজন থানা হেফাজতে আছে। তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচনে টাকা ছড়ানোর প্রমাণ এখনো মেলেনি। এ জন্য ১৫১ ধারায় তাঁদের আদলতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।