রাজশাহী নগরের পাঠানপাড়া মাদ্রাসা মাঠ-সংলগ্ন একটি পুকুর থেকে ব্যান্ডেজ জড়ানো এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে
রাজশাহী নগরের পাঠানপাড়া মাদ্রাসা মাঠ-সংলগ্ন একটি পুকুর থেকে ব্যান্ডেজ জড়ানো এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে

অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিশোরের লাশ পাওয়া গেল পুকুরে

রাজশাহী নগরের পাঠানপাড়া মাদ্রাসা মাঠ-সংলগ্ন পুকুর থেকে ব্যান্ডেজে জড়ানো এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে লাশটি উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ওই কিশোরের নাম নাভিদ ইসলাম (১৫)। সে তেরোখাদিয়া এলাকার খাদেমুল ইসলাম ও রিতা বেগমের ছেলে। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হওয়ার পর নাভিদ নানির বাড়িতে বড় হয়েছে। সে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিল বলে পরিবার জানিয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ২ ফেব্রুয়ারি নাভিদের শরীর গ্যাস লাইটারের আগুনে পুড়ে যায়। পরে সেদিনই তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। আজ সোমবার সকাল সাতটার পর থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে সকাল নয়টার দিকে নগরের পাঠানপাড়া এলাকায় একটি পুকুরে শরীরে ব্যান্ডেজ জড়ানো মরদেহ ভাসতে দেখে এলাকাবাসী ফায়ার সার্ভিস ও রাজপাড়া থানায় ফোন দিলে তারা গিয়ে নাভিদের লাশটি উদ্ধার করে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নাভিদ ছোটবেলা থেকে বড় হয়েছে নানির বাড়িতে। বাবা-মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদের পর থেকে সেখানেই ছিল। পরে ২ ফেব্রুয়ারি নিজের শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে।

নাভিদের মা রিতা বেগম বলেন, ‘আজ সোমবার সকাল সোয়া সাতটার দিকে নাভিদ হাসপাতাল থেকে পালিয়ে আসে। আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাইনি। তার মধ্যে সব সময় আত্মহত্যার প্রবণতা কাজ করত।’

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, ২ ফেব্রুয়ারি থেকে নাভিদ বার্ন ইউনিটে ভর্তি ছিল। তার শরীরের ১৮ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। শ্বাসনালিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তবে প্রায় সুস্থ হয়ে গিয়েছিল সে। হঠাৎ করে আজ সকাল থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে রাজপাড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পরে তাঁরা জানতে পারেন, নাভিদের মরদেহ একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

হাসপাতালের পরিচালক আরও বলেন, ‘পরে আমরা জানতে পেরেছি, ওই ছেলে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিল। এই বিষয়গুলো পরিবারের সদস্যরা আগে জানাননি। এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক। একই সঙ্গে দুর্ভাগ্যজনক। কারণ সে সুস্থ হয়ে উঠেছিল।’

রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল হক বলেন, হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, নাভিদ ব্যান্ডেজ পরা অবস্থায় লুঙ্গি পরে বের হচ্ছে। পরে আর তাকে দেখা যায়নি। এ ঘটনার তদন্তে আরও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হচ্ছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।