মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার হাসাড়া এলাকায় বন্ধ থাকা একটি ফিলিং স্টেশনের তেলের পাম্পের ট্যাংক পরিষ্কারের সময় একটি শিশুর লাশ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে লাশটি উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এর আগে একই ট্যাংকে গ্যাস বিস্ফোরণে ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মীসহ পাঁচজন আহত হন।
লাশ উদ্ধার হওয়া শিশুটির নাম জুনায়েদ (১২)। সে স্থানীয় নয়াপাড়া এলাকার নুর হোসেনের ছেলে। বিস্ফোরণে আহত পাঁচজনের মধ্যে একজন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী। তাঁর নাম রাসেল (২২)। আহত বাকি চারজনের নাম-পরিচয় প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি। তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাসাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সাব্বির আহমেদ নাসিমের মালিকানাধীন ফিলিং স্টেশনটি প্রায় এক মাস ধরে বন্ধ। এটি আবার চালু করার জন্য কয়েক দিন ধরে তেলের ট্যাংক পরিষ্কারের কাজ চলছিল। গতকাল রাতে ফিলিং স্টেশনের লোকজন ট্যাংক পরিষ্কার করার সময় ভেতরে একটি শিশুর লাশ পান। পরে তাঁরা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে বিষয়টি জানান। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে শিশুটির লাশ উদ্ধার করেন। সেখানে লাশ কীভাবে এল, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যার হাউস পরিদর্শক আবুল কাল আজাদ বলেন, তেলের ট্যাংকে প্রচুর গ্যাস জমে থাকায় শিশুর লাশ উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হয়। এরই মধ্যে রাত ১০টার দিকে গ্যাস থেকে বিস্ফোরণে কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরে আবার অভিযান চালিয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত শিশুটির পরিবারের বরাত ফায়ার সার্ভিস জানায়, ওই তেলের পাম্পে আলমপুর এলাকার ১২ বছর বয়সী এক শিশু কাজ করত। তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। জুনায়েদও পাম্পে কাজ করতে চেয়েছিল। তবে জুনায়েদের পরিবার কাজ করতে দেয়নি। লাশ উদ্ধারের পর থেকে পাম্পে কাজ করা শিশুকে পাওয়া যাচ্ছে না।
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাউয়ুম উদ্দীন চৌধুরী বলেন, তেলের পাম্পের ট্যাংকে তিনটি মুখ ছিল। এর মধ্যে একটি মুখ খোলা ছিল। ওই ট্যাংক ২০ ফুট গভীর। সেখানে প্রায় সাত ফুট উচ্চাতায় তেল ছিল। ট্যাংকের কূপের সঙ্গে রশি দিয়ে একটি বালতি ঝুলানো ছিল। সেখানেই শিশু জুনায়েদের লাশ পাওয়া গেছে। জুনায়েদের পরিচিত শিশুটিকে এখনো পাওয়া যায়নি। নিহত জুনায়েদের শরীরে ছোট কাঁটা–ছেঁড়ার জখম পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, গত শুক্রবার বাড়ি থেকে বের হয়ে জুনায়েদ নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় পরিবারের লোকজন থানায় কোনো অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরি করেনি। শিশুটির লাশ উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।