ঢাকার সাভার উপজেলার বিরুলিয়ার দত্তপাড়া এলাকা থেকে এক নারীর খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ওই নারী স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ। পারিবারিক কলহের জেরে দু-এক দিন আগে স্বামী নয়ন মিয়া মাথা ও কনুই থেকে দুই হাত কেটে স্ত্রী শান্তনা বেগমকে হত্যা করেন বলে দাবি পুলিশের।
নিহত শান্তনা বেগমের (৩৬) বাবার বাড়ি ধামরাই উপজেলার বালিয়ায়। আটক নয়ন মিয়ার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার মৈশামুড়া গ্রামে। গতকাল সোমবার রাত ১১টার দিকে দত্তপাড়ার একটি নার্সারির ভেতরে মরদেহটি পাওয়া যায়।
হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত জানাতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে সাভার মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহীনুর কবির বলেন, সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দত্তপাড়া এলাকায় সেতু নার্সারির ভেতরে অজ্ঞাতনামা একটি মরদেহ পড়ে থাকার খবর জানতে পারে সাভার মডেল থানা-পুলিশ। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মাথা ও কনুই থেকে দুই হাত কাটা অবস্থায় একটি মরদেহ উদ্ধার করে। অদূরেই একটি পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় কাটা মাথা ও দুই হাত পাওয়া যায়। পরে স্থানীয় লোকজন চেহারা দেখে এটি শান্তনার মরদেহ বলে শনাক্ত করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা শাহীনুর কবির বলেন, শান্তনার প্রথম স্বামীর প্রতিবেশী ছিলেন নয়ন। ছয়-সাত মাস আগে নয়ন ও শান্তনা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে সাভারে চলে আসেন। তবে বিয়ের পর থেকে তাঁদের মধ্যে প্রায়ই পারিবারিক দ্বন্দ্ব লেগে থাকত। নয়ন সব সময় সন্দেহ করতেন, বিভিন্ন ছেলেদের সঙ্গে শান্তনার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে।
শাহীনুর কবির আরও বলেন, তিন দিন আগে শান্তনা মা ও বোনকে ফোন দিয়ে জানান, নয়ন তাঁকে নির্যাতন করছেন। এ ঘটনায় শান্তনার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে নয়ন তাঁকে দু–তিনটি থাপ্পড় মারেন। ওই ঘটনার পর কোনো একসময় নয়ন বাসা থেকে বের হয়ে গেলে শান্তনাও তাঁর পেছন পেছন যান। এরপর সেতু নার্সারিতে স্ত্রীকে হত্যা করেন নয়ন। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রী।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জুয়েল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। ঠিক কোন সময় হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ঘটনায় নিহত শান্তনার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।