গ্রেপ্তার
গ্রেপ্তার

নাশকতা ও সহিংস ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদল সভাপতিসহ গ্রেপ্তার ১০৭

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে নারায়ণগঞ্জে নাশকতা ও সহিংস ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে থানা ছাত্রদলের সভাপতি হীরাসহ ১০৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা নাশকতা ও এই ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছেন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদল সভাপতি হীরা (৩০), রবিন (২৩), আশিক (২২), ইউসুফ হৃদয় (২৬), আবু সাইদ (২৯), জনি (১৯), হোসাইন (২৬) ও রমজান (৫৩)। গত সোমবার রাত থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ১৮ জুলাই কোটাবিরোধী আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে দুষ্কৃতকারী ও নাশকতাকারী ব্যক্তিরা সাইনবোর্ড, শিমরাইল, জালকুড়ি, ভূঁইগড়সহ বিভিন্ন স্থানে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছেন। তাঁরা ছাত্র আন্দোলনের আড়ালে পুলিশের ওপর আক্রমণ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন অফিস, পাসপোর্ট অফিসে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেন। পরে এসবি গার্মেন্টসে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করেছেন। প্রথম দিন থেকেই পুলিশ তাঁদের প্রতিরোধের চেষ্টা করে আসছিল। তাঁদের প্রতিরোধ করে পিবিআই অফিসে আটকে পড়া পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করা হয়েছে।

গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৭ নাশকতাকারী ও দুষ্কৃতকারী ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম সাতজন পাসপোর্ট, পিবিআই অফিস ও এসবি গার্মেন্টসে হামলা ও আগুন দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। এই ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে তাঁরা সরাসরি জড়িত ও নিজেরা আগুন দিয়েছেন।

গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন, ফতুল্লা থানা জামায়াতের আমীর মাসুদ মেম্বার, ফতুল্লা থানা যুবদল নেতা মামুনের নেতৃত্বে অন্যান্য জামায়াত নেতার উপস্থিতি ও নির্দেশে পিবিআই, পাসপোর্ট অফিস ও এসবি গার্মেন্টসে আগুন দিয়েছেন তাঁরা।

জিজ্ঞাসাবাদে আরও তথ্য পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন গোলাম মোস্তফা রাসেল। তিনি বলেন, ‘যুবদল ও জামায়াত নেতাদের ওপরের নির্দেশদাতা ও প্রত্যক্ষ মদদদাতা জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর ও বিএনপির নেতা ইকবাল হোসেন, মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ, সাজ্জাদ, সজল, সাজিদ, ইমন, নূর হোসেন, সাইদ। তাঁরা প্রত্যক্ষভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে তাঁদের নেতা-কর্মীসহ আরও অনেককে নিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছেন। আমাদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত থাকবে, তাঁদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি দাঁড় করানো হবে।’

মামলা ও গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, এখন পর্যন্ত ৯টি মামলা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরও মামলা করা হবে। গত ৩ দিনে মোট ৩০৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুষ্কৃতকারী, নাশকতাকারী বিএনপি-জামায়াতের যাঁরা জড়িত, তাঁদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

সহিংসতার ঘটনার সঙ্গে সাধারণ ছাত্ররা জড়িত ছিল না উল্লেখ করে গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনের আড়ালে অনুপ্রবেশকারী ব্যক্তিরা ঢুকে এই সহিংসতা করেছেন। এটা স্পষ্ট জামায়াত-শিবির, বিএনপির যাঁরা আছেন, তাঁরা পরিকল্পিতভাবে এটা করেছেন। পাশাপাশি তাঁরা কিছু লোককে টাকা দিয়ে, প্রণোদনা দিয়ে, হায়ার করে কিছু জায়গা থেকে নিয়ে এসেছেন। তাঁদের খাবার দিয়েছেন, পানি দিয়েছেন। এই ধ্বংসযজ্ঞে যাতে তাঁদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা যায়, তাঁদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য যে ধরনের প্রণোদনা দেওয়া প্রয়োজন, সব ধরনের প্রণোদনা তাঁরা দিয়েছেন। আর্থিক প্রণোদনা থেকে শুরু করে সবকিছু তাঁরা করেছেন।