পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের হামলা চেষ্টার অভিযোগে নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ দলটির সহযোগী সংগঠনের ১ হাজার ৭৮৮ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে।
এর মধ্যে দুটি মামলা করেছে পুলিশ। আর একটি মামলা করেছেন আওয়ামী লীগের এক কর্মী। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সুধারাম থানায় মামলা তিনটি করা হয়। তিনটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ২৯ জনকে।
আজ বুধবার সকালে সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বিকেলে বিএনপির মিছিল থেকে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলার চেষ্টার ঘটনায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ১০৩ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা করেছেন আওয়ামী লীগের সদস্য মো. হেলাল। এ মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৭০০ থেকে ৮০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া একই দিন বিকেলে জেলা জামে মসজিদ মোড় ও পৌর বাজার এলাকায় পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর, সরকারি কাজে বাধা ও ককটেল বিস্ফোরণে ঘটনায় তিনি (ওসি) বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেছেন।
ওসি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, দুটি মামলার একটিতে ৪৪, অন্যটিতে ৪১ জন এজাহারভুক্ত আসামি। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে। তিনটি মামলাতেই জেলা বিএনপির সভাপতি এ জেড এম গোলাম হায়দার ও সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমানকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে। তিনটি মামলায় এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২৯ জনকে। তাঁদের আজ দুপুরে নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হবে।
গতকাল সন্ধ্যায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদলের ৫০০ থেকে ৭০০ সমর্থক রশিদ কলোনি থেকে মিছিল নিয়ে টাউন হল মোড় পার হয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের দিকে আসতে চাইলে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। এ সময় বিএনপির সমর্থকেরা পুলিশের দিকে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। তাঁদের ইটের আঘাতে আট পুলিশ সদস্য আহত হন। এ সময় পুলিশ ছত্রভঙ্গ করতে আটটি ফাঁকা গুলি ছুড়ে।
পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান। তিনি বলেন, পুলিশ বিনা কারণে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মিছিলে বাধা দিয়েছে। বিএনপির কর্মীরা কোনো ধরনের সহিংসতায় না জড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে চলে যান। আবদুর রহমান আরও বলেন, আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে তাঁরা নিজেরা নিজেরা গন্ডগোলে লিপ্ত হন। সেখানে বিএনপির কেউ যাননি। বিএনপির প্রতিবাদ কর্মসূচিতে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি দেখে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ বেসামাল হয়ে এখন সাজানো মামলা করে হয়রানির পথ বেছে নিয়েছে।
সুধারাম থানা-পুলিশের ভাষ্য, মঙ্গলবার বিকেলে জামে মসজিদ মোড় ও পৌর বাজার এলাকায় বিএনপির মিছিল থেকে পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে কয়েক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশ ধাওয়া করে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ঘটনার পর তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে পুলিশ বিভিন্ন স্থান থেকে ৩৩ জনকে আটক করে। পরে যাচাই-বাছাই শেষে ২৯ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।