ভূমিকম্পে ভবন কেঁপে উঠলে আতঙ্কে বাইরে বের হয়ে আসেন বাসিন্দারা। আজ শনিবার সকালে কুমিল্লা শহরের অশোকতলা এলাকায়
ভূমিকম্পে ভবন কেঁপে উঠলে আতঙ্কে বাইরে বের হয়ে আসেন বাসিন্দারা। আজ শনিবার সকালে কুমিল্লা শহরের অশোকতলা এলাকায়

ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ঘরবাড়ি, আতঙ্কে রাস্তায় মানুষ

৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘরবাড়ি, দালানকোঠা কেঁপে ওঠে। এতে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে অনেক মানুষ বাড়ির বাইরে সড়কে বের হয়ে আসেন। তবে এখন পর্যন্ত দেশের কোথাও ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আজ শনিবার সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, চুয়াডাঙ্গা, নোয়াখালী, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, শেরপুর, পটুয়াখালী, চাঁদপুর, ফেনী, নারায়ণগঞ্জ, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্পের খবর পাওয়া গেছে।

ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন ঢাকা আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা রবিউল হক। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস বলছে, রামগঞ্জ উপজেলা থেকে আট কিলোমিটার পূর্ব ও উত্তর-পূর্বে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল।

ভূমিকম্পের সময় বাড়িতেই ছিলেন নোয়াখালী শহরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক গিয়াস উদ্দিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ভূমিকম্পের কারণে হঠাৎ তাঁর চারতলা ভবন কাঁপতে থাকে। এ সময় তিনি ও পরিবারের সদস্যরা ভয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিক তাঁরা বাসার বাইরে এসে সড়কে অবস্থান নেন। তবে ভূমিকম্পে ভবনের কোনো ক্ষতি হয়নি বলে জানান তিনি।

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরপাতা গ্রামের ইব্রাহিম হোসেন বলেন, তিনি গ্রামের একটি দোকানে বসেছিলেন। হঠাৎ ভূমিকম্প শুরু হয়। তিনি রাস্তায় বের হয়ে আসেন। পাশের পুকুরে দেখতে পান, পানি কাঁপছে। গ্রামের মানুষজন এখন ভূমিকম্প নিয়েই আলোচনা করছেন।

নারায়ণগঞ্জের কাশিপুরে একটি বহুতল ভবনে অবস্থান করছিলেন প্রথম আলোর সংবাদদাতা গোলাম রাব্বানী। তিনি জানান, ভবনের ওপরের তলাগুলোতে কারখানা রয়েছে। ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চারদিকে মানুষের কোলাহল শুরু হয়। কিছু পোশাকশ্রমিককে দেখা যায়, তাঁরা পাগলের মতো ওপরতলা থেকে ভবনের নিচে নামছেন। তাঁরা ভবনের সামনে গিয়ে দাঁড়ান। এ সময় এক নারী চিৎকার করে বলছিলেন, ‘আমরা কই দাঁড়ামু ছার, ভিল্লিংনি (বিল্ডিং) ভাইঙ্গা পড়ে!’

নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ভূমিকম্পের সময় তিনি বাইরে অবস্থান করছিলেন। হঠাৎ ভূমিকম্প অনুভব করেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোথাও কোনো ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাননি।

রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান প্রথম আলোকে বলেন, ভূমিকম্পের তীব্রতা অনেক ছিল। ভূমিকম্পের পর তিনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজখবর নিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির কোনো সংবাদ পাননি।

[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন প্রথম আলোর সংশ্লিষ্ট এলাকার নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা]