কুড়িয়া পাওয়া তিন লাখ টাকার সোনাসহ ব্যাগ মালিকের হাতে ফিরিয়ে দিচ্ছেন মুহাম্মদ শফি(ডানে)
কুড়িয়া পাওয়া তিন লাখ টাকার সোনাসহ ব্যাগ মালিকের হাতে ফিরিয়ে দিচ্ছেন মুহাম্মদ শফি(ডানে)

কুড়িয়ে পাওয়া সোনাসহ ব্যাগ মালিকের হাতে ফিরিয়ে দিলেন রাউজানের বাবুর্চি

বাড়ি ফেরার পথে একটি ব্যাগ কুড়িয়ে পেয়েছিলেন চট্টগ্রামের রাউজানের মুহাম্মদ শফি। ব্যাগটি যেখানে পেয়েছেন, সেখানে তিন ঘণ্টা ঘোরাঘুরি করেও এর মালিকের সন্ধান পাননি তিনি। শেষে বাড়ি ফিরে ব্যাগটি খুলে দেখেন, ব্যাগের ভেতরে প্রায় আড়াই ভরি সোনার গয়না, যার মূল্য অন্তত তিন লাখ টাকা। এমন দামি জিনিস মালিকের কাছে কীভাবে ফিরিয়ে দেবেন, তা নিয়ে ভাবনায় পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। এরপর স্ত্রীর পরামর্শে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ নিয়ে পোস্ট দেন শফি। এতে সাড়াও মেলে। ব্যাগের মালিক যোগাযোগ করেন তাঁর সঙ্গে। গতকাল মঙ্গলবার সোনার গয়নাসহ মালিকের কাছে ব্যাগটি ফিরিয়ে দেন।

ব্যাগ কুড়িয়ে পাওয়া মুহাম্মদ শফি চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের কাজীপাড়ার বাসিন্দা। আর সোনার ব্যাগ হারানো নারী হলেন একই উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর সর্তা গ্রামের ফেরদৌস বেগম।

প্রথম আলোকে মুহাম্মদ শফি বলেন, গত সোমবার ভোরে ফটিকছড়ির মাইজভান্ডার দরবার শরীফে যান তিনি। দুপুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে বাড়ি ফেরার পথে ওই উপজেলার আজাদী বাজারে সড়কের পাশে একটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। এরপর সেখানে গাড়ি থামিয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা ব্যাগের মালিকের খোঁজ করেন। শেষে বাড়ি ফিরে এসে ফেসবুকে ব্যাগের বিবরণ দিয়ে একটি পোস্ট দেন। শফির পোস্ট অনেকেই শেয়ার করেন। ফেসবুকে পোস্ট দেখে রাউজানের হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর সর্তা গ্রামের মুহাম্মদ ফয়সাল নামের এক যুবক যোগাযোগ করে জানান, ব্যাগটি তাঁর মা ফেরদৌস বেগমের। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর মঙ্গলবার রাতে সোনার গয়নাসহ ব্যাগটি ফেরদৌস বেগমের ছেলে মুহাম্মদ ফয়সালের কাছে হস্তান্তর করেন শফি।

কথা বলে জানা গেছে, মুহাম্মদ শফি পেশায় একজন বাবুর্চি। ১৮ বছর ধরে রয়েছেন এই পেশায়। সাংসারিক জীবনে শফি দুই ছেলে ও দুই মেয়ের বাবা। এর আগেও একটি কমিউনিটি সেন্টারে রান্নার কাজে গেলে দেড় লাখ টাকা দামের একটি মুঠোফোন কুড়িয়ে পেয়েছিলেন শফি। পরে সেটিও মালিকের হাতে তুলে দেন তিনি।

হারিয়ে যাওয়া ব্যাগের মালিক ফেরদৌস বেগম প্রথম আলোকে বলেন, সোমবার হাটহাজারীতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফিরছিলেন তিনি। পথে অটোরিকশায় ব্যাগটি হারিয়ে ফেলেন। ব্যাগটি হারিয়ে বাসায় গিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। পরে ফেসবুকের মাধ্যমে মো. শফির সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যাগ ফেরত পান। তিনি বলেন, ‘শফির মতো মানুষ দেশে খুব বিরল। আমি কল্পনা করিনি সোনার গয়না ফিরে পাব।’