যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় হিজড়া মঙ্গলী ওরফে পলিকে (৩২) কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার বিকেলে যশোর সদর উপজেলার মুড়লী মোড় এলাকা থেকে রমজান হোসেন ওরফে বাবু (২৭) নামের ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রমজান স্বীকার করেছেন, বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় হিজড়া মঙ্গলীকে তিনি গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যা করেছেন।
শুক্রবার রাতে হিজড়া মঙ্গলীর লাশ উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের মাছনা গ্রামের নিজের বসতঘর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। মঙ্গলী মনিরামপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের ঘুঘুদা গ্রামের খালেক গাজীর সন্তান। তাঁকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার রমজান হোসেন উপজেলার কামালপুর গ্রামের আলী আহম্মেদের ছেলে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খানপুর ইউনিয়নের মাছনা গ্রামের মোড়লপাড়ায় ১০-১২ বছর আগে জমি কিনে বাড়ি করে সেখানে একাই থাকতেন মঙ্গলী। তিনি অন্য হিজড়াদের সঙ্গে দল বেঁধে গ্রামে গ্রামে সদ্যোজাত শিশুর বাড়িতে গিয়ে আশীর্বাদ করার নামে অর্থ আদায় ও বাজারে গিয়ে দোকান থেকে নগদ অর্থ সাহায্য নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাঁর বাড়ি প্রাচীরঘেরা হওয়ায় আশপাশের লোকজনের ওই বাড়িতে যাতায়াত ছিল কম।
রমজান হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম মেহেদী মাসুদ প্রথম আলোকে বলেন, হিজড়া মঙ্গলীর সঙ্গে রমজানের দীর্ঘদিন ধরে সম্পর্ক ছিল। সেই সূত্রে তিনি মঙ্গলীর বাড়িতে যেতেন। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে মঙ্গলীর বাড়িতে যান রমজান। তাঁরা ঘরে বসে কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে মঙ্গলী রমজানকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় রমজান ঘরে থাকা ধারালো দা দিয়ে মঙ্গলীকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এতে মঙ্গলী সেখানেই মারা যান। এরপর মঙ্গলীর এক জোড়া সোনার কানের দুল ও ইমিটেশনের চুড়ি নিয়ে রাত তিনটার দিকে বাড়ির দেয়াল টপকে রমজান পালিয়ে যান।
এ বি এম মেহেদী মাসুদ আরও বলেন, মঙ্গলীর ভাই মিজানুর রহমানের করা মামলায় রমজানকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ রোববার দুপুরে আদালতে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, রমজান হোসেন অত্যন্ত দুর্ধর্ষ প্রকৃতির ব্যক্তি। তাঁর বিরুদ্ধে মনিরামপুর থানায় মাদক, চুরি ও মারামারির বেশ কয়েকটি মামলা আছে।