জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষকের গাড়িতে অ্যাম্বুলেন্স ধাক্কা দেওয়ার ঘটনায় তিন দিন ধরে অ্যাম্বুলেন্সটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আটকে রাখা হয়েছে। ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক উবাইদুর রহমান সিদ্দিকী অ্যাম্বুলেন্সটি আটকে রেখেছেন। আজ শনিবার বেলা সোয়া একটার দিকে ক্যাম্পাসে অ্যাম্বুলেন্সটি দেখা যায়।
উবাইদুর রহমান সিদ্দিকীর দাবি, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে অ্যাম্বুলেন্সটি তাঁর গাড়ির পেছন থেকে ধাক্কা দেওয়ায় অনেক ক্ষতি হয়েছে। তাঁর গাড়িটি মেরামত করতে ৭০ হাজার টাকা খরচ হবে। এই টাকা দিলে অ্যাম্বুলেন্সটি ছেড়ে দেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিশমাইল এলাকায় ওই শিক্ষকের গাড়িটিতে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় টাঙ্গাইলগামী একটি অ্যাম্বুলেন্স। এতে তাঁর গাড়ির পেছনের অংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে ওই শিক্ষক তাঁর বিভাগের কয়েক শিক্ষার্থীকে ডেকে অ্যাম্বুলেন্সটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিয়ে আসেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার কয়েক কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত হন। কিন্তু নিরাপত্তা শাখার কাছে গাড়িটি হস্তান্তর না করে শিক্ষার্থীরা শহীদ রফিক-জব্বার হলে নিয়ে যান। এ সময় অ্যাম্বুলেন্সচালক চাবি রেখে ভয়ে পালিয়ে যান। পরে সাংবাদিকেরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার কিছু সময় পর গাড়িটি নিরাপত্তা শাখার কাছে হস্তান্তর করেন শিক্ষার্থীরা।
আজ শনিবার দুপুর সোয়া একটার দিকে সরেজমিন দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার কার্যালয়ে সামনে অ্যাম্বুলেন্সটি রাখা আছে। গাড়িটির নম্বর কক্সবাজার ছ-৭১০০১৬।
এ বিষয়ে অধ্যাপক উবাইদুর রহমানের সঙ্গে আজ মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনি ধরেননি। তবে ওই ঘটনার পর বৃহস্পতিবার রাতে তিনি প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ওই অ্যাম্বুলেন্স ধাক্কা দেওয়ায় তাঁর গাড়ির ক্ষতি হয়েছে। পরে তিনি পাশের এলাকা থেকে এক গ্যারেজ কর্মচারীকে ডেকে এনে গাড়িটি মেরামত করতে কত খরচ হবে জানতে চাইলে ওই কর্মচারী ৭০ হাজার টাকার কথা জানান। তাঁর গাড়ির মেরামত খরচের টাকা দিলে তিনি গাড়িটি ছেড়ে দেবেন।
তবে টাঙ্গাইল বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির সদস্য শরীফ সিদ্দিকী বলেন, ওই শিক্ষকের গাড়িটি যে পরিমাণে ক্ষতি হয়েছে, সেটা মেরামত করতে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার বেশি খরচ হবে না। কিন্তু ওই শিক্ষক গাড়ির পেছনের অংশ পুরোপুরি নতুন লাগিয়ে নেবেন বলে জানিয়েছেন। এতে ৭৫ হাজার টাকার মতো খরচ হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার প্রধান কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন বলেন, ‘আমাদের উবাইদুর স্যার অ্যাম্বুলেন্সটি আটকে রাখার বিষয় জানাননি। তিনি তাঁর শিক্ষার্থীদের জানিয়েছেন। ওরা অ্যাম্বুলেন্স আটকে রেখেছিল। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পর প্রক্টর স্যারের নির্দেশে অ্যাম্বুলেন্সটি নিরাপত্তার শাখার কাছে রাখা হয়।’