নেত্রকোনা সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের ভাসাপাড়া এলাকায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। আজ শনিবার বেলা একটার পর থেকে চারদিকে উঁচু প্রাচীরঘেরা দ্বিতল বাড়িটির চারপাশে অবস্থান নেয় পুলিশের একটি দল। তাদের ধারণা, ওই বাড়িতে জঙ্গি প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার করা অস্ত্র ও বোমা থাকতে পারে। এরই মধ্যে কিছু সরঞ্জাম উদ্ধারের দাবি করেছে পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজনের বরাতে জানা যায়, ভাসাপাড়া এলাকায় ওই বাড়ি আটপাড়া উপজেলা নোয়াপাড়া গ্রামের আবদুল মান্নার নামের এক ব্যক্তি প্রায় ২০ বছর আগে নির্মাণ করেন। আবদুল মান্নান পেশায় ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) শিক্ষক। তিনি সেখানে একটি কলেজ স্থাপন করতে চান। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। দুই বছর আগে বাড়িটি তিনি এক ব্যক্তির কাছে ভাড়া দেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, ভাড়া দেওয়ার পর থেকে ভাড়াটিয়ার বাড়ির সীমানাপ্রাচীর আরও উঁচু করেন। এরপর নারকেলগাছ, আমগাছ ধরে সীমানাপ্রাচীরে প্রায় ২০টির মতো সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়। বাড়িটির ভেতরে দুটি পুকুর রয়েছে। ওই বাড়িতে স্থানীয় কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয় না।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আজ বেলা একটার দিকে নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালামের নেতৃত্বে অভিযান চালায় একদল পুলিশ। এ সময় বাড়িটির নিচতলার একটি কক্ষে একটি বিদেশি পিস্তল, ১৭ রাউন্ড গুলি, প্রচুর পরিমাণ খেলনার পিস্তল, দুটি ওয়াকিটকি, একটি হ্যান্ডকাপ, এক বস্তা জিহাদি বইসহ বিভিন্ন জিনিস পাওয়া যায়। পুলিশের ধারণা, বাড়িটিতে বোমা–জাতীয় বিস্ফোরক দ্রব্য থাকতে পারে।
বিকেল পৌনে ৬টার দিকে নেত্রকোনা পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রথম আলোকে জানান, পুলিশের বিশেষায়িত টিম কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়েছে। ধারণা বাড়িটি একটি জঙ্গি আস্তানা। এখানে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। বোমাবিশেষজ্ঞ টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছলে ভেতরে প্রবেশ করে বিস্তারিত বলা যাবে।
এন্ট্রিটেরিয়ালিজম ইউনিট ময়মনসিংহ বিভাগের অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক আসাদুল্লাহ চৌধুরী জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের বিশেষজ্ঞ দল, সোয়াট ইউনিটের বিশেষজ্ঞ দলকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা আসলে ভেতরে কী আছে তা বিস্তারিত বলা যাবে।