নেত্রকোনায় ছাত্রদলের এক নেতার হাত-পায়ের রগ কেটে দেওয়ার ঘটনায় জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক অনিক মাহবুব চৌধুরীসহ চার নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাসের জন্য অনিকের সাংগঠনিক পদ স্থগিত, সহসভাপতি তরিকুল ইসলাম খান ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেনকে অস্থায়ীভাবে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ থেকে বহিষ্কার এবং সদর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আনজুল হককে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. সারওয়ার আলম আজ শনিবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, নেত্রকোনা পৌর ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান ওরফে বাপ্পীর হাত ও পায়ের রগ কেটে ও কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে চারজনের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার অনন্তপুর এলাকায় একটি ওরসে মশিউর রহমানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা মশিউরের হাত, পায়ের রগসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ওই দিন রাতে তাঁকে ঢাকার হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। সেখানে টানা দুই সপ্তাহ নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন থাকার পর মশিউরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা শেষে গত বুধবার তাঁকে নেত্রকোনা শহরের কুড়পাড় এলাকায় বাসায় নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে আছেন তিনি।
মশিউরের ওপর হামলার ঘটনায় ১৬ ফেব্রুয়ারি তাঁর মামা মো. জাকারিয়া বাদী হয়ে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক অনিক মাহবুব চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর হোসেনসহ ৬ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ রনি মিয়া নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তিনি জামিনে আছেন। হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন সময় মানববন্ধন, বিক্ষোভ, স্মারকলিপিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে মশিউরের সমর্থকেরা।
নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম বলেন, ছাত্রদল নেতার ওপর হামলার ঘটনায় মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।