সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে পরিচয়। গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। তারপর তাঁদের মধ্যে ঘর বাধার স্বপ্ন। তবে বাধা ছিল দুই দেশের দূরত্ব, ভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতি। তবে সেসব বাধা অতিক্রম করে বিয়ে করেছেন বাংলাদেশের মল্লিকা খাতুন (২২) ও তুরস্কের নাগরিক মুস্তফা ফাইক (৩০)।
মল্লিকার বাড়ি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের কাকিলামারী গ্রামে; বাবার নাম কামরুজ্জামান। মল্লিকা স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। গত রোববার বিকেলে মুস্তফা ফাইক ও তাঁর মামা মো. মুছা কাকিলামারী গ্রামে আসেন। সোমবার রাতে পারিবারিকভাবে মল্লিকা ও মুস্তফার বিয়ে হয়।
মল্লিকা খাতুন বলেন, ‘তিন বছর আগে ইনস্টাগ্রামে নিজের একটি ছবি পোস্ট করি। সেই ছবি দেখে পছন্দ করেন মুস্তফা ফাইক। এরপর আমাদের মধ্যে যোগাযোগ শুরু হয়। একপর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আমি তুর্কি জানতাম না, সে–ও বাংলা জানত না। প্রথমে গুগল ট্রান্সলেটরের সাহায্যে নিজ নিজ মাতৃভাষায় যোগাযোগ করতাম। এখন তুর্কি ভাষা অনেকটাই রপ্ত করতে পেরেছি।’
মল্লিকা খাতুন আরও বলেন, ‘আমি তাকে (মুস্তফা) বলেছিলাম, বাংলাদেশে এলে বিয়ে করব। আমাকে ভালোবেসে মুস্তফা তুরস্ক থেকে এসেছে। নানা আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমেই আমাদের বিয়ে হয়েছে। সারাটা জীবন সুখ-দুঃখে একসঙ্গে থাকতে চাই। ভিসা প্রসেসিংয়ের কাজ চলছে। আমি স্বামীর সঙ্গে তুরস্কে চলে যাব।’
মল্লিকার সহায়তায় মুঠোফোনে মুস্তফা ফাইকের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। তিনি বলেন, তিনি একজন প্রকৌশলী। তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের বাজলাল এলাকার বাসিন্দা। ভালোবাসার মানুষের জন্য বাংলাদেশে এসেছেন। মল্লিকাকে বিয়ে করতে পেরে তিনি খুশি। এ দেশের মানুষ ও প্রকৃতি তাঁকে মুগ্ধ করেছে।
মল্লিকার বাবা কামরুজ্জামান বলেন, ‘ছয় মাস আগে মুস্তফা বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আমাদের বাড়িতে এসেছিল। আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক রীতি অনুযায়ী আমি তার অভিভাবককে নিয়ে আসতে বলেছিলাম। এবার সে তার মামাকে নিয়ে এসেছে। ধর্মীয় রীতি মেনেই আমার মেয়েকে তার হাতে তুলে দিয়েছি।’
এ বিয়ে উপলক্ষে আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের পদচারণে তাঁদের বাড়ি মুখর হয়ে ওঠে। বিদেশি বর দেখতে এলাকার লোকজন ভিড় করছেন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আলাউদ্দিন মোল্লা বলেন, ইনস্টাগ্রামে দুজনের সম্পর্ক হয়েছিল। সেই টানেই তুরস্ক থেকে মুস্তফা তাঁর মামাকে সঙ্গে নিয়ে চলে এসেছেন। পরিবারের সম্মতিতে তাঁরা বিয়ে করেছেন।
শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিয়ের খবর শুনেছি। তবে সেখানে যাওয়া হয়নি। তিনি (মুস্তফা) বৈধভাবে এসেছেন। দুজনের পরিবারের সম্মতিতেই বিয়ে হয়েছে।’