জামালপুর রেলপথ

একটি ট্রেন ও ১০টি স্টেশন বন্ধ, দুর্ভোগ 

৫-১০ বছর ধরে এসব স্টেশন বন্ধ। করোনার সময় ময়মনসিংহ থেকে আসা লোকাল ট্রেনটি বন্ধ হয়ে যায়। 

জনবল-সংকটের কারণে আট বছর ধরে জামালপুর কোর্ট স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
প্রথম আলো

খাদেমুল ইসলামের বাড়ি জামালপুর পৌর শহরের কোর্ট স্টেশনের পশ্চিমে চন্দ্রা এলাকায়। চাকরি করেন ইসলামপুর উপজেলা পরিষদে। তিনি বলেন, ময়মনসিংহ স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা একটি লোকাল ট্রেনে তিনি কোর্ট স্টেশন থেকে ইসলামপুরে যাতায়াত করতেন। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ট্রেনটি কোর্ট স্টেশনে আসত। কিন্তু দুই বছর ধরে ট্রেনটি বন্ধ। এখন তিনি সড়কপথে ইসলামপুর যান। এই ট্রেনে অনেক চাকরিজীবী সকালে কর্মস্থলে যেতেন। ট্রেনটি বন্ধ হওয়ার কারণে একদিকে তাঁদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, অন্যদিকে সড়কপথে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে।

জনবল-সংকটের কারণে ৫ থেকে ১০ বছর ধরে জামালপুরে একটি ট্রেন ও ১০টি রেলস্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ট্রেনে যাতায়াত, টিকিট কাটা ও ট্রেনের খবর নিয়ে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। অন্যদিকে উপার্জন থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে রেলওয়ে বিভাগ। স্টেশন বন্ধ থাকায় মূল্যবান সরঞ্জাম চুরি, নষ্ট হওয়াসহ নাশকতার আশঙ্কাও রয়েছে।

রেলস্টেশন সূত্র জানায়, জামালপুরে ১০৮ কিলোমিটার রেলপথে ১৯টি স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে ২ বছর ধরে নরুন্দি স্টেশন, ৮ বছর ধরে জামালপুর কোর্ট স্টেশন, ১০ বছর ধরে ইসলামপুরের মোশারফগঞ্জ স্টেশন, সরিষাবাড়ীর বাউসী স্টেশন, বয়ড়া স্টেশন, জাফরশাহী স্টেশন, ৫ বছর ধরে শহীদনগর ও হেমনগর স্টেশন বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া মেলান্দহের দুরমুঠ স্টেশন ও সদরের কেন্দুয়া স্টেশন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা থাকে। বাকি সময় ওই দুটি স্টেশন বন্ধ থাকে। অন্যদিকে এই রেলপথে লোকাল ও মেইল মিলে ৮টি ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে দুই বছর ধরে ময়মনসিংহ থেকে দেওয়ানগঞ্জগামী একটি মেইল ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই সব স্টেশনে একজন স্টেশনমাস্টার ও সহকারী মাস্টার এবং চারজন করে পয়েন্টসম্যান থাকার কথা। কিন্তু এসব স্টেশনে কেউ নেই। একজন করে স্টেশনমাস্টার রয়েছেন দুরমুঠ স্টেশন ও কেন্দুয়া স্টেশনে।

এ কারণে রাতে ট্রেনের চালককে সংকেত দেওয়া, যাত্রীদের সহায়তা করা ও টিকিট কাটার কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে এসব স্টেশনে ট্রেন থামছে, যাত্রীরাও ওঠানামা করছেন।

জামালপুরের সহকারী স্টেশনমাস্টার মাসুমা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, তীব্র জনবল-সংকটের কারণে স্টেশনগুলো বন্ধ। এতে প্রতিনিয়ত ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটে। সব সময় ট্রেন চলাচল নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকতে হয়। বন্ধ স্টেশনগুলোতে নাশকতার আশঙ্কাও রয়েছে। স্টেশন বন্ধ থাকায় সব সময় সতর্ক থাকতে হয়। করোনার সময় ময়মনসিংহ থেকে আসা লোকাল ট্রেনটি বন্ধ হয়ে যায়।