কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া সমুদ্রসৈকত থেকে আজ সকালে সাঁতার শুরু হয়
কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া সমুদ্রসৈকত থেকে আজ সকালে সাঁতার শুরু হয়

সবার আগে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিলেন রাসেল, ১২ বার মনিরুজ্জামান

টানা দুইবার সবার আগে বঙ্গোপসাগরের বাংলা চ্যানেল সাঁতরে পাড়ি দিলেন সাইফুল ইসলাম রাসেল। আজ কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্ট মার্টিনে অনুষ্ঠিত ১৭তম বাংলা চ্যানেল সাঁতারে ৩ ঘণ্টা ৫৩ মিনিট সময় নিয়ে সবার আগে সেন্ট মার্টিনের উত্তর সৈকতে পৌঁছান। রাসেল এ নিয়ে ছয়বার বাংলা চ্যানেল সাঁতারে সফল হলেন। আজকের সাঁতারে মোট ৩১ জনের মধ্যে ২০ জন সাঁতারু বাংলা চ্যানেল সাঁতার সম্পন্ন করেছেন।

রাসেলের পরই সাঁতার সম্পন্ন করেন রাব্বি রহমান ও মনিরুজ্জামান। ৩ ঘণ্টা ৫৪ মিনিট সময় নিয়ে দ্বিতীয়বার রাব্বি এবং ৪ ঘণ্টা ৫০ মিনিট সময় নিয়ে বাংলাদেশ টেলিভিশনের চিত্রগ্রাহক মনিরুজ্জামান ১২ বারের মতো বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিলেন। আয়রনম্যান মোহাম্মদ সামছুজ্জামান আরাফতা এবার নবমবারের মতো বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিলেন। তাঁর সময় লেগেছে ৪ ঘণ্টা ৫৭ মিনিট।

বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিতে সাঁতারুরা জড়ো হন শাহপরীর দ্বীপে

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৭ মিনিটে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া সমুদ্রসৈকত থেকে এ সাঁতার শুরু হয়। শাহপরীর দ্বীপ থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার সমুদ্রপথ হচ্ছে ‘বাংলা চ্যানেল’। ১৭তম বাংলা চ্যানেল সাঁতার-২০২২-এর আয়োজন করেছে ষড়জ অ্যাডভেঞ্চার ও এক্সট্রিম বাংলা। আয়োজনে সহযোগিতা করেছে ভিসাথিং, ইউনাইটেড সিকিউরিটিজ লিমিটেড ও এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড।

বাংলা চ্যানেল সাঁতারের প্রধান সমন্বয়ক ১৮ বার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়া সাঁতারু লিপটন সরকার বলেন, ‘এবার সাগর শান্ত ছিল, কিন্তু তাপমাত্রা অনেক কম ছিল। অন্যদিকে ভাটার টানটাও কম ছিল। এ কারণে বেশ কয়েক সাঁতারু নানা সমস্যায় পড়েন এবং সাঁতার সম্পন্ন করতে পারেননি।’

রাব্বি রহমান ৩ ঘণ্টা ৫৪ মিনিট সময় নিয়ে দ্বিতীয় ও তিনবার, মনিরুজ্জামান ৪ ঘণ্টা ৫০ মিনিট সময় নিয়ে তৃতীয় এবং ১২তম পাড়ি দেন।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি)–এর পরিচালক সাঁতারু শেখ মাহবুবুর রহমান আজ তৃতীয়বারের মতো বাংলা চ্যানেল সাঁতার সম্পন্ন করেন। মোহাম্মদ জিহাদ হোসেনও তিনবার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্য আলী রওনক ইসলাম দ্বিতীয়বারের মতো বাংলা চ্যানেল জয় করেছেন। এ ছাড়া দ্বিতীয়বারের মতো বাংলা চ্যানেল সাঁতার সম্পন্ন করেছেন সাঁতারু আবুল কালাম আজাদ, মাসুদ রানা, মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, মোহাম্মদ কামাল হোসেন ও উজ্জ্বল চৌধুরী। এবারই প্রথমবারে বাংলা চ্যানেলে সফল হয়েছেন মোহাম্মদ আবু রাশেদ, মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, এবাদুল ইসলাম, হাম্মদ বদর উদ্দীন, মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, এস কে রায়হান, মোহাম্মদ তারেক হাসান, আবদুল্লাহ আল সাবিত, ও মোহাম্মদ ফারুক হোসাইন।

মুক্ত সাগরে দূরপাল্লার এ সাঁতার সম্পর্কে লিপটন সরকার বলেন, ‘আন্তর্জাতিক রীতি মেনে এ সাঁতার পরিচালনা করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে প্রতিবছর এ নৌপথে সাঁতার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে বাংলাদেশে দূরপাল্লার সাঁতার জনপ্রিয় হচ্ছে।’ বঙ্গোপসাগরে দূরপাল্লার সাঁতারের উপযোগী ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দূরত্বের বাংলা চ্যানেল আবিষ্কার করেন প্রয়াত ‘অ্যাডভেঞ্চারগুরু’ কাজী হামিদুল হক। ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো বাংলা চ্যানেল জয় করেছিলেন লিপটন সরকার, ফজলুল কবির সিনা ও সালমান সাইদ।