মাদারীপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ আহত হয়েছেন ১৫ জন। গতকাল রাতে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে।
মাদারীপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ আহত হয়েছেন ১৫ জন। গতকাল রাতে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে।

মাদারীপুরে ‘স্ত্রীকে ভরণপোষণ’ না দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ১৫

মাদারীপুরে স্ত্রীকে ভরণপোষণ না দেওয়াকে কেন্দ্র করে বাগ্‌বিতণ্ডায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ আহত হয়েছেন ১৫ জন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার ঘটমাঝি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সদর উপজেলার ঘটমাঝি এলাকার সাবেদ আলী খালাসির সঙ্গে মোস্তফাপুর ইউনিয়নের খাকছাড়া গ্রামের বাসিন্দা শাহারুনের বিয়ে হয়। সম্প্রতি শাহারুন অভিযোগ করেন, বেশ কয়েক মাস ধরে তাঁকে নির্যাতন করছেন স্বামী সাবেদ ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সেই সঙ্গে তাঁকে ভরণপোষণও দেওয়া হচ্ছে না।

এসব ব্যাপারে আলোচনার জন্য গতকাল সাবেদের বাড়িতে আসেন শাহারুনের বাবা ও তাঁর পরিবারের লোকজন। বিষয়টি নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে তা সংঘর্ষে পরিণত হয়। দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ালে নারীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৯ জনকে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা হলেন সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ খাকছাড়া এলাকার শাহীন মাতুব্বর, আলেয়া বেগম, সাইদুর মাতুব্বর, খবির মাতুব্বর এবং ঘটমাঝি ইউনিয়নের নুরনাহার বেগম, আকু খালাসি, মনির খালাসি, বুলবুল চৌকিদার ও মিলন শেখ।

হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অখিল সরকার প্রথম আলোকে বলেন, মারামারিতে আহত নয়জনের মধ্যে সাতজনকে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সবার শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত আছে।

খবির মাতুব্বরের যে অভিযোগ, তাঁর মেয়ের ভরণপোষণ দেওয়া হচ্ছে না, এটা আসলে সঠিক কথা নয়। তিনি মিথ্যে অভিযোগ নিয়ে এই ঝামেলা সৃষ্টি করলেন।
সাবেদ আলী খালাসি, অভিযুক্ত স্বামী

শাহারুনের বাবা খাকছাড়া এলাকার খবির মাতুব্বরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ের বিয়ের পর থেকে ওর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনে হাতে নির্যাতিত হচ্ছে। গত দুই মাস ধরে ওর স্বামী কোনো প্রকার ভরণপোষণ দিচ্ছে না। আমার মেয়ে আমাদের কাছে এসব বিষয় জানালে আমরা ওর শ্বশুরবাড়িতে যাই। সেখানে গেলে খালাসির বাড়ির লোকজন আমাদের ওপর চড়াও হয়। পরে আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।’

এদিকে সাবেদ আলী খালাসি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ‘খবির মাতুব্বর লোকজন নিয়ে আমাদের ওপর প্রথমে হামলা চালান। তাঁর মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে নিজের আধিপত্য দেখাতে চেয়েছিলেন তিনি। খবির মাতুব্বরের যে অভিযোগ, তাঁর মেয়ের ভরণপোষণ দেওয়া হচ্ছে না, এটা আসলে সঠিক কথা নয়। তিনি মিথ্যে অভিযোগ নিয়ে এই ঝামেলা সৃষ্টি করলেন।’

এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ করেনি কোনো পক্ষই। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে।