নরসিংদীতে ঘুরতে গিয়ে নদীতে ডুবে মাদ্রাসাছাত্রের মৃত্যু

পানিতে ডুবে মৃত্যু
প্রতীকী ছবি

নরসিংদী শহরের মেঘনা নদীর তীরে দল বেঁধে ঘুরতে গিয়েছিল একদল কিশোর। ঘোরাঘুরি শেষে গরমে ক্লান্ত হয়ে নদীতে গোসল করতে নামে তারা। সবাই উঠে এলেও মো. নিরব মিয়া (১৪) নামের এক মাদ্রাসাছাত্র নদীর পানিতে তলিয়ে যায়। আজ মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে শহরের নাগরিয়াকান্দি এলাকার মেঘনা নদীর ওপারে শেখ হাসিনা সেতুসংলগ্ন স্থান থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিরব মিয়া নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের সঙ্গীতা এলাকার দারোগা বাড়ির মোড়ের মৃত শাহীন আলমের একমাত্র ছেলে। সে সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের গাবতলী এলাকার জামেয়া কাশেমিয়া মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

ঘটনার সময় সঙ্গে থাকা এক কিশোরের বরাত দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা বলেন, দুপুর ১২টার দিকে চিনিশপুর ইউনিয়নের সঙ্গীতা এলাকার স্থানীয় সাত কিশোর একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করে নাগরিয়াকান্দির ওই সেতু এলাকায় ঘুরতে যায়। তাদের সবাই স্থানীয় বিভিন্ন বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। ঘোরাঘুরি শেষে বেলা দুইটার দিকে গরমে ক্লান্ত হয়ে তারা সেতুসংলগ্ন স্থানে নদীর পানিতে গোসল করতে নামে।

তাদের মধ্যে একজন পানিতে নামেনি, চারজন তীরের কাছাকাছি ছিল, নিরবসহ দুজন সাঁতরে একটু সামনে চলে যান। একপর্যায়ে নদীতে গর্তে পড়ে যায় ওই দুজন।

এই ঘটনা দেখতে পেয়ে বাকিরা সাঁতরে তাদের উদ্ধার করতে এগিয়ে যায়। কিন্তু সঙ্গে থাকা কিশোরকে উদ্ধার করতে পারলেও নিরব পানিতে তলিয়ে যায়। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ কল দেন। পরে তাঁদের মাধ্যমে খবর পেয়ে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় নিরবের লাশ উদ্ধার করতে সক্ষম হন তাঁরা। কোনো অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে তার লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

নিরবের মামা কাজল মিয়া বলেন, ‘বাড়িতে কাউকে কিছু না বলেই নিরব এলাকার বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে এসেছিল। সে ছিল তার বিধবা মায়ের একমাত্র অবলম্বন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দেখি, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা নৌকায় করে আমার ভাগিনাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। লাশ উদ্ধারের পর আমরা ফায়ার সার্ভিসকে অনুরোধ করেছিলাম, তার এইটুকু শরীরে যেন কাটাছেঁড়া করা না হয়। পরে বিনা ময়নাতদন্তে তার লাশ আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছেন তাঁরা।’

নরসিংদী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. রায়হান বলেন, ‘৯৯৯–এর মাধ্যমে খবর পেয়ে এক ঘণ্টার চেষ্টায় ওই মাদ্রাসাছাত্রের লাশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি আমরা। কোনো অভিযোগ না থাকায় স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।’