বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় দিনদুপুরে বাসায় ঢুকে উম্মে সালমা (৫০) নামের এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ডিপ ফ্রিজে গুম করে রাখার ঘটনায় আজ সোমবার সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত থানায় কোনো হত্যা মামলা দায়ের হয়নি। পুলিশ হত্যা রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ করছে।
গতকাল রোববার বেলা একটা থেকে দেড়টার মধ্যে দুপচাঁচিয়া সদরের জয়পুরপাড়া এলাকায় ‘আজিজিয়া মঞ্জিল’ নামের একটি চারতলা বাসায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত উম্মে সালমা দুপচাঁচিয়া ডিএস ফাজিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ আজিজুর রহমানের স্ত্রী। আজিজুর রহমান শিক্ষকতার পাশাপাশি দুপচাঁচিয়া উপজেলা মসজিদের খতিব এবং ইমাম-মুয়াজ্জিন সমিতির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। এ ছাড়া তাঁর একটি ট্রাভেল এজেন্সি প্রতিষ্ঠানও আছে।
দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে, চুরি বা ডাকাতির উদ্দেশ্যে দুর্বৃত্তরা ওই বাসায় ঢোকেনি। বাসা থেকে কোনো কিছু খোয়াও যায়নি। এমনকি উম্মে সালমার শরীরে থাকা গয়নাও অক্ষত আছে।
ওসি ফরিদুল ইসলাম আরও বলেন, পারিবারিক কিংবা পূর্বশত্রুতার জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। বেশ কিছু বিষয় সামনে রেখে তদন্ত চলছে। থানায় হত্যা মামলা এখনো দায়ের হয়নি। তবে পুলিশ খুনি শনাক্তে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের সিও অফিস বাসস্ট্যান্ডের কাছে বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়কসংলগ্ন চারতলা আজিজিয়া মঞ্জিলের তৃতীয় তলায় পরিবার নিয়ে থাকেন আজিজুর রহমান। তিনি রোববার সকাল ১০টার দিকে বাসা থেকে মাদ্রাসার উদ্দেশে বের হন। তাঁর ছেলে শাদ বিন আজিজুর রহমান দুপচাঁচিয়া ডিএস মাদ্রাসার আলিম প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। শাদও সকালের দিকে মাদ্রাসায় যান। বাড়িতে উম্মে সালমা একা ছিলেন।
ছেলে শাদের সঙ্গে আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে উম্মে সালমার মুঠোফোনে শেষ কথা হয়। দুপুরের দিকে শাদ বাসায় গিয়ে দেখেন, বাইরে থেকে তালা লাগানো। এরপর তাঁর কাছে থাকা বিকল্প চাবি দিয়ে বাসার ভেতরে ঢুকে দেখেন, আলমারি খোলা। একটি কুড়াল ও হাতুড়ি পড়ে আছে সেখানে। এ সময় মাকে খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে বাসার ডিপ ফ্রিজের দরজা আলগা দেখে সেখানে উঁকি দিয়ে দেখেন, ভেতরে তাঁর মায়ের হাত বাঁধা লাশ রেখে দেওয়া হয়েছে।