জনগণের প্রত্যাশা পূরণের দায়িত্ব নিয়ে আসা অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। খুলনায় এক গণসংলাপে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই যাঁরা করেছেন, তাঁদের সবার সমর্থন নিয়ে তাঁদের প্রত্যাশা পূরণের দায়িত্ব নিয়ে এসেছে এই সরকার। এই সরকারকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। এই সরকারের ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটা সরকারেরও মনে রাখা দরকার, আমাদের সবারও মনে রাখা দরকার। কারণ, এই সরকারের সাফল্য মানে আমাদের সম্মিলিত স্বপ্নের বাস্তবায়ন।’
আজ শুক্রবার বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবের লিয়াকত আলী মিলনায়তনে এই গণসংলাপের আয়োজন করে গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা কমিটি। ‘কেমন বাংলাদেশ চাই’ শীর্ষক এ গণসংলাপে সভাপতিত্ব করেন খুলনা জেলা গণসংহতি আন্দোলনের আহ্বায়ক মুনীর চৌধুরী।
সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের যেমন রাষ্ট্র পরিচালনা দেশ রক্ষার দায়িত্ব দিয়েছে জনগণ, এই জনগণের সমস্যা সমাধানের দায়িত্বও আপনাদের দিয়েছে। সরকার যত বেশি জনগণের সমস্যার সমাধান করবে, জনগণ তত ঐক্যবদ্ধ হবে।’
ভারতের গণমাধ্যমের একটা অংশ এবং বিজেপি তাদের নিজেদের স্বার্থে ফ্যাসিস্টদের সাহায্য করে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা দেখতে পারছি, পতিত ফ্যাসিস্টরা ভারতে পালিয়ে গিয়ে সেখান থেকে ষড়যন্ত্র করছে। আর ভারতের গণমাধ্যমের একটা অংশ এবং বিজেপি তাদের নিজেদের স্বার্থে ফ্যাসিস্টদের সাহায্য করে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে চিত্রিত করছে এখানে নাকি হিন্দুদের নিরাপত্তা নেই, বৌদ্ধদের নিরাপত্তা নেই কিংবা চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা অন্য জাতির সদস্যদের নিরাপত্তা নেই। এখানে নাকি নারীরা নিরাপদে নেই। হ্যাঁ, ৫ আগস্টের পরে কিছু হামলার ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত করেন। কারণ, এরা যেভাবে এটাকে প্রচার করছে, তাতে বলা যায়, এটাতে তাদেরও সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। পতিত ফ্যাসিস্টরাই হামলা করতে পারে। তদন্ত করেন, প্রতিটি ঘটনারই বিচার করতে হবে।’
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ওদিকে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের পাঠিয়েছে। আবার ওখানে যুদ্ধ চলছে, একটা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। নানা দিক থেকে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা আজকে হুমকির মুখে। কাজেই সেদিক থেকে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকা দরকার।’
খুলনা জেলা গণসংহতি আন্দোলনের সদস্য আল আমিন শেখের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য দেওয়ান আবদুর রশিদ, খুলনা জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. অলিয়ার রহমান শেখ, ঝিনাইদহ জেলা আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) খুলনা মহানগর সভাপতি খান লোকমান হাকিম, সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক কুদরত-ই-খুদা, নারীনেত্রী ও উন্নয়ন সংগঠক শিলভী হারুন, বেগম আক্তার জাহান, গণসংহতি আন্দোলন খালিশপুর থানা কমিটির আহ্বায়ক মো. মোশারেফ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
গণসংলাপে দেশের বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতি, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গতিমুখ, বাজার নিয়ন্ত্রণ, দ্রব্যমূল্যের দাম সহনীয় করার দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া বন্ধ হয়ে যাওয়া পাটকল রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় চালু, শ্রমিকসহ অন্যান্য খাতের শ্রমিকদের চাকরির নিরাপত্তা বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা।