গাজীপুরের টঙ্গীতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে এক পথচারী নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত সোয়া ১১টার দিকে মহাসড়কের টঙ্গী ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর ছিনতাইকারী সন্দেহে গণপিটুনিতে একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহত পথচারীর নাম মো. জাফর উল্লাহ (৪২)। তিনি ফেনীর করোচিয়া গ্রামের করিমুল্লাহর ছেলে। পরিবারের সঙ্গে ঢাকার সবুজবাগে থাকতেন। কোনো এক কাজে গতকাল টঙ্গীতে এসেছিলেন। তিনি একসময় পোশাকশ্রমিক ছিলেন বলে জানা গেছে।
গণপিটুনিতে আহত ব্যক্তির নাম মো. সগির। প্রাথমিকভাবে তাঁর বাবার নাম বা কোথায় থাকেন, তা জানা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাত সোয়া ১১টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে টঙ্গীর ফায়ার সার্ভিসের সামনে দিয়ে টঙ্গী বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন মো. জাফর উল্লাহ। এ সময় হঠাৎ তিন থেকে চারজন ছিনতাইকারী তাঁর পথ আটকায়। তাঁর সঙ্গে থাকা টাকা ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ নিয়ে জাফর উল্লাহ ও ছিনতাইকারীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে ছিনতাইকারীরা তাঁর গলা ও থুতনির নিচে চাকু দিয়ে আঘাত করে। এতে চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন জাফর উল্লাহ।
এ সময় ঘটনাটি দেখতে পেয়ে এগিয়ে আসেন স্থানীয় লোকজন। ছিনতাইকারীদের ধাওয়া দেন। এর মধ্যে সগির নামের একজন তাঁদের হাতে ধরা পড়েন। স্থানীয় লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে গণপিটুনি দেন তাঁকে। জাফর উল্লাহকে উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আর গুরুতর আহত অবস্থায় সগিরকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
টঙ্গী পূর্ব থানার উপপরিদর্শক মো. এহতেশাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে জাফর উল্লাহ লাশ উদ্ধার করেছি। তাঁর গলায় ও থুতনির নিচে ছুরিকাঘাত আছে। আর ঘটনাস্থলে পড়ে ছিল গণপিটুনির শিকার সগির। পরে আমরা তাঁকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠাই। নিহত জাফর উল্লাহ তাঁর পরিবারের সঙ্গে থাকেন ঢাকার সবুজবাগে। তবে কোনো এক জরুরি কাজে গতকাল টঙ্গীতে এসেছিলেন বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পারি। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান। ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ পাঠানো হয়েছে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।’