রাজধানী ঢাকায় মহাসমাবেশে যোগ দিতে মানিকগঞ্জ থেকে বিএনপির অধিকাংশ নেতা-কর্মী রওনা হয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা। তাঁদের দাবি, জেলার প্রায় ২০ হাজার কর্মী-সমর্থক মহাসমাবেশে যোগ দেবেন। এদিকে আওয়ামী লীগের তারুণ্যের জয়যাত্রা কর্মসূচিতে ১২ হাজারের বেশি নেতা-কর্মী যোগ দিচ্ছে বলে জানা গেছে। তাঁদের জন্য ২২৮টি বাস ভাড়া করা হয়েছে।
দুই দলের নেতা-কর্মীরা বলেন, ঢাকার পাশের জেলা মানিকগঞ্জ। এ কারণে এই জেলা থেকে দুই দলেরই বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। এ জন্য কয়েক দিন ধরে এলাকায় দুই দলের নেতা-কর্মীরা নানা প্রস্তুতি সভাও করেছেন।
দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে মানিকগঞ্জ থেকে রওনা দেবেন। নেতা-কর্মীদের যাতায়াতের জন্য যুবলীগ ১০০টি, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ৪৮টি এবং ছাত্রলীগ ৮০টি বাস ভাড়া করেছে। এ ছাড়া আরও ২০টি মাইক্রোবাসও ছাত্রলীগ ভাড়া করেছে।
জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক বলেন, যুবলীগের নেতা-কর্মীরা ঢাকায় তারুণ্যের জয়যাত্রায় অংশ নিতে গত তিন-চার দিন ধরে নানা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জেলার সাতটি উপজেলা থেকে চার হাজারের বেশি নেতা-কর্মী এই কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সিফাত কোরাইসি দাবি করেন, মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলা থেকে ছাত্রলীগের পাঁচ হাজারের নেতা-কর্মী ঢাকায় তারুণ্যের জয়যাত্রা কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। এ জন্য ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ৮০টি বাস ও ২০টি মাইক্রোবাস ভাড়া করা হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের অনেকেই ঢাকায় অবস্থান করছেন। তাঁরাও এই কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বলে তিনি জানান।
জেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল থেকে নেতা-কর্মীরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে গণপরিবহনে বা ভেঙে ভেঙে ঢাকায় যাচ্ছেন। তবে অধিকাংশ নেতা-কর্মী আগে থেকেই ঢাকায় আত্মীয়স্বজনের বাসায় অবস্থান করছেন।
দুজন নেতা বলেন, মহাসমাবেশে অংশ নিতে বাধা দিতে মানিকগঞ্জ-সিঙ্গাইর-হেমায়েতপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের উপজেলার ধল্লা এলাকায় তল্লাশিচৌকিতে বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। এমনকি ধরপাকড়ও শুরু করেছে পুলিশ। বুধবার সকালে সিঙ্গাইর উপজেলার তালেবপুর বাজার থেকে উপজেলা বিএনপির যুববিষয়ক সম্পাদক মো. হাসান আলী এবং তালেবপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. তারেক মাহমুদকে গ্রেপ্তার করা হয়। অথচ তাঁরা জামিনে ছিলেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান বলেন, মহাসমাবেশে যেতে বাধা দিয়ে নেতা-কর্মীদের আটক করা হচ্ছে। সিঙ্গাইরের ধল্লা এলাকায় তল্লাশিচৌকি বসিয়ে পুলিশ নেতা-কর্মীদের হয়রানি করছে। এরপরও অন্তত ২০ হাজার নেতা-কর্মী মহাসমাবেশে যোগ দেবেন। নেতা-কর্মীদের আটকে রাখা যাবে না।
সিঙ্গাইর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মানবেন্দ্র সরকার মানব বলেন, গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তি নাশকতার মামলার আসামি।
যানবাহনে তল্লাশির বিষয়ে ধল্লা পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিদর্শক (এসআই) তারিকুল ইসলাম বলেন, এখানে প্রতিনিয়তই যানবাহনে তল্লাশি চালানো হয়।
জেলা শহর ঘুরে দেখা যায়, আগামীকাল দুই দলেরই কর্মসূচি থাকায় সড়কে বাস কম। যাত্রীদের দীর্ঘ সময় গন্তব্যে যেতে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। বিকেলে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীকে বাস ভাড়া করতে দেখা গেছে। এসব বাসে করে আগামীকাল সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ঢাকায় যাবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাসের চালক বলেন, আগামীকাল সমাবেশ। সড়কে ঝামেলা হতে পারে, এ চিন্তা থেকে আগেভাগেই মালিকদের কেউ কেউ রাস্তায় গাড়ি নামাননি।