ঘূর্ণিঝড় হামুন

দুই দিন ধরে বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন বাঁশখালীর লাখো বাসিন্দা

ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডবে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে অসংখ্য গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। গতকাল বুধবার বাঁশখালীর সাধনপুরে
 ফাইল ছবি

দুই দিনেরও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎবিহীন রয়েছেন চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার লক্ষাধিক বাসিন্দা। পাওয়া যাচ্ছে না মুঠোফোনের নেটওয়ার্কও। গত মঙ্গলবার রাতে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’–এর প্রভাবে উপজেলার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া হয়নি বলে জানান বাসিন্দারা।

এদিকে উপজেলার বিদ্যুৎ–সংযোগ পুরোপুরি স্বাভাবিক হ‌তে সপ্তাহখানেক সময় লাগতে পারে বলে জানায় উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপজেলার ৫০৭টি খুঁটি ও ৬০ লাখ টাকার তার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানানো হয়।

বাঁশখালী পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) রিশু কুমার ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি লাইন মেরামত করে সংযোগ ফিরিয়ে আনতে।’

উপজেলার খানখানাবাদ ইউনিয়নের প্রেমাশিয়া এলাকার বাসিন্দা ও পোলট্রি খামারি মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত থেকে বিদ্যুৎ নেই। খামারের মুরগির বাচ্চা নিয়ে বিপদে পড়ে গেলাম। দ্রুত বিদ্যুৎ না পেলে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হব।’

উপজেলা প্রশাসন জানায়, ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলার ২ জন নিহত ও ১৮৫ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া ১১টি গরু-মহিষ ও ৭টি ভেড়া মারা গেছে। ২ হাজার ৮৯০টি ঘর ভেঙে গেছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫ হাজার ৩৪৫টি ঘর। ১ হাজার ১৯ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে এবং আড়াই শ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। মঙ্গলবার রাত থেকে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়লেও গতকাল বুধবার দুপুর থেকে তা স্বাভাবিক হয়। কিন্তু বাতাসের তোড়ে বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে ও সড়কে গাছ পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বিদ্যুৎ–সংযোগ এখনো বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন আক্তার বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে বাঁশখালীর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সড়ক যোগাযোগ চালু হলেও বিদ্যুৎ–ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ জেলা প্রশাসনে পাঠানো হয়েছে।