মেহেরপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আনারুল ইসলামের প্রতীক (মোটরসাইকেল) ছাড়া অন্য কোনো প্রতীকে সিল মারতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ইকবাল হোসেন। তিনি মেহেরপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টায় সদর উপজেলার আমদহ ইউনিয়নের আশরাফপুর গ্রামে এক মতবিনিময় সভায় এই বক্তব্য দেন। তাঁর দেওয়া বক্তব্যের ২ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ইকবাল হোসেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের বড় ভাই।
প্রথম দফায় ৮ মে সদর উপজেলা পরিষদের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে চেয়ারম্যান পদে জেলা কৃষক লীগের সহসভাপতি হাসেম আলী (আনরস), জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম শাহীন (কাপ পিরিচ), জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল মান্নান (ঘোড়া) এবং আমদহ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সদস্য আনারুল ইসলাম (মোটরসাইকেল) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগ নেতা ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আনারুল ভাই একজন যোগ্য প্রার্থী। উপজেলা চেয়ারম্যান এমন একজনকে করতে হবে যে টোটাল উপজেলার গ্রামে গ্রামে আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রাখতে পারেন। যে ব্যক্তি আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীসহ জনগণের সুখে–দুঃখে পাশে থাকতে পারবেন। যিনি নিজের জমি বেচে আওয়ামী লীগকে টিকাতে পারবেন, সেই ধরনের লোক আমরা উপজেলায় চাই। আনারুল ভাই ছাড়া এই ধরনের কোনো লোক নেই। আর কোনো প্রার্থী নেই।’
৮ মে শুধু মোটরসাইকেল প্রতীকে একচেটিয়া ভোট হবে উল্লেখ করে ইকবাল হোসেন বলেন, ‘প্রতিটি সেন্টারে (কেন্দ্রে) মোটরসাইকেল জিতবে। আমরা শহরের লোকজনকে বুঝিয়েছি যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিতে হবে। আনারুল ভাইকে আমরা প্রতিটি সেন্টারে ব্যাপক ভোটে বিজয়ী করব।’ তিনি উপস্থিত নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের কাছে আশা করব, এই আশরাফপুর গ্রামে অন্য কোনো এজেন্ট থাকবেন না। শুধু আনারুল ভাইয়ের মার্কায় (প্রতীকে) সিল মারতে হবে। আর কোনো মার্কায় সিল মারতে দেওয়া হবে না।’
বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমদহ এলাকায় সাবেক চেয়ারম্যান আনারুল ইসলাম খুব জনপ্রিয় নেতা। আমি এ কারণে অন্য কোনো প্রার্থীর এজেন্ট পাওয়া যাবে না বলে কথা বলতে গিয়ে এমন কথা বেরিয়ে গেছে। বিষয়টি ওভাবে মনে করার কিছু নেই।’
তবে প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থীদের একজন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধরাণ সম্পাদক ইব্রাহিম শাহীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এভাবে প্রকাশ্যে জনপ্রশাসনমন্ত্রীর ভাই ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি যদি এমন বক্তব্য দেন তাতে উপজেলা নির্বাচন জনগণের কাছে কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এগুলো নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন।’ বিষয়টি তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আকারে জানাবেন।